ভারতে বিটিভি ও বেতার সম্প্রচারের ব্যবস্থা চূড়ান্ত: তথ্যমন্ত্রী

সমগ্র ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারের সম্প্রচারের ব্যবস্থা চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

hassan-mahmud_samakal-5d0f59fed0a4f

রোববার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার দিনে দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষিত বিষয়টিকে শুভ সংবাদ হিসেবে বর্ণনা করেন তথ্যমন্ত্রী। এছাড়া কারিগরী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আগামী মাস থেকে এ সম্প্রচার চালু হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে একটি শুভ সংবাদ আপনাদের দিতে চাই। বাংলাদেশের টেলিভিশন ভারতে দেখা যায় না– এ নিয়ে আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। এখন খুব সহসাই ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন দেখা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। সেই ধারাবাহিকতায় গত ৭ মে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও ভারতের সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ প্রসার ভারতীর মধ্যে কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর ভারতের নতুন সরকার গঠন হলে নতুন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদকার এ মাসের ১৯ তারিখে সেদেশের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল দূরদর্শনের মাধ্যমে বিটিভি সম্প্রচারের চুড়ান্ত অনুমোদন দেন। এর মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন সম্প্রচারের সমস্ত আয়োজন শেষ হয়েছে। এখন কারিগরি দিকগুলো ঠিকঠাক করে আমরা খুব সহসা ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রদর্শনের দিনক্ষণ ঠিক করবো। আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে শুরু হবে এ যাত্রা।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের একটি কারিগরী দল এ মাসের ২৫ তারিখ ভারতে যাবে এবং ২৭ তারিখ পর্যন্ত সেখানে থাকবে। তারা আসার পর আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। এছাড়াও প্রসার ভারতীর সাথে বাংলাদেশ বেতারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সেই চুক্তির আলোকে ভারতে বাংলাদেশ বেতারও শোনা যাবে। এতে ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের দ্বার উন্মোচন হলো।’

ভারতে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশনের সম্প্রচার হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপাতত বাংলাদেশ টেলিভিশন দেখা যাবে। বেসরকারি টেলিভিশনের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে কোনো বাধা নেই। সেখানে যারা কেবল অপারেটর তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় বাণিজ্যিকভাবে সেখানে এ প্রদর্শন লাভজনক নয় বরং অলাভজনক। সে নিয়েও আমাদের কথাবার্তা চলছে।’

এর আগে বক্তব্যের শুরুতে আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমকর্মীসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৪৯ সালের এ দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ দিনেই ১৭৫৭ সালে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার পতন হয়েছিল। আবার এ দিনেই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২১ বছর পর ‘৯৬ সালে যে দিন আবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে সেদিনও ছিল ২৩ জুন।’

‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই এই বাঙালি জাতির সমস্ত অর্জন সম্ভব হয়েছিল। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের দাবিতে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছিল। কিন্তু সেই দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকার গঠন করার পর বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করা হয়, ২১শে ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবে পালন করা শুরু হয়, শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।’

তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবগণের মধ্যে মো. মিজান-উল-আলম ও নূরুল করিম এবং তথ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান তথ্য অফিসার ফায়জুল হকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

Pin It