ভোজ্য আঁশ বেশি খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে

download

উপকারী জিনিসও অতিরিক্ত ব্যবহার করলে অপকারী হয়ে ওঠে।

স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে বিষয়টি বিশেষভাবে প্রযোজ্য। এর আদর্শ উদাহরণ হল কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে ভোজ্য আঁশ খাওয়ার মাত্রা।

হজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী এই উপাদান। নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তে শর্করার মাত্রা এবং মলের সঙ্গে যোগ হয়ে তা অপসারণ প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

তবে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে যে সমস্যাগুলো এর দূর করার কথা সেগুলোরই কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই ভোজ্য আঁশ।

ভোজ্য আঁশ বা ‘ফাইবার’ কী?

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের অন্ত্র স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদ অলিভিয়া অ্যাশটন ব্র্যান্ট বলেন, “ভোজ্য আঁশ হল এক প্রকার হজমের অযোগ্য ‘কার্বোহাইড্রেইট’। মানব শরীরে এমন কোনো এনজাইম থাকে না যা খাবারে থাকা ভোজ্য আঁশকে ভাঙতে পারে। আর অন্ত্রের জন্য এই ভোজ্য আঁশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি আরও বলেন, “ভোজ্য আঁশ দুই প্রকার, ‘সল্যুবল ফাইবার’ বা পানিতে দ্রবণীয় আঁশ আর ‘ইনসল্যুবল ফাইবার’ বা পানিতে অদ্রবণীয় আঁশ।

দ্রবণীয় আঁশ তরলে মিশে গিয়ে জেল ধরনের পদার্থ তৈরি করে। মল হজমতন্ত্র দিয়ে পার হওয়ার সময় এটি স্পঞ্জ হিসেবে কাজ করে এবং আশপাশের সবকিছু শুষে নেয়। আপেল, শিম, চিয়া সিডস, ওটস ইত্যাদিতে এটি পাওয়া যায়।”

পানিতে অদ্রবণীয় আঁশ পাওয়া শষ্যজাতীয় খাবার ও ‘ক্রুসিফেরাস’ ধরনের সবজি যেমন- ব্রকলি, ব্রাসেল স্পাউটস, কপি ইত্যাদিতে। এটি হজম না হয়েই দ্রুত পার হয়ে মলকে ভারি করে এবং নিয়মিত অপসারণ নিশ্চিত করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এই দুইয়ের মিলিত প্রভাবেই।

টেক্সাসের সনদস্বীকৃত পুষ্টিবিদ জেনা ভোলপে বলেন, “হজমের ভারসাম্য বজায় রাখতে দুই ধরনের আঁশই প্রয়োজনীয়। তাই খাদ্যাভ্যাসেও এদের ভারসাম্য থাকা চাই। সঙ্গে নিয়মিত যদি পর্যাপ্ত পানি পান করা হয় তবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে থাকবে।”

“যে কোনো আঁশই যদি দৈনিক চাহিদার তুলনায় বেশি গ্রহণ করা হয় তবে সেটাই কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হবে।”

কারণ

পানি বা তরল যদি শরীরে কম থাকে আর তার সঙ্গে ভোজ্য আঁশ যদি বেশি গ্রহণ করা হয় তবে মল হয়ে উঠবে অত্যন্ত ঘন শক্ত এটি বস্তু। আর অন্ত্রের ভেতর দিয়ে যেকোনো কিছু সহজভাবে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য অন্ত্র ভেজা ও পিচ্ছিল থাকতে হবে। সেজন্যও পানি দরকার। অর্থাৎ পানির অভাব থাকলে ওই ভোজ্য আঁশ কাল হয়ে দাঁড়াবে।

অপরদিকে আঁশ মলকে ভারি ও মোটা বানায়। তবে অতিরিক্ত আঁশের কারণে তা অতিরিক্ত মোটা ও ভারি হয়ে গেলে সেটাও অন্ত্র দিয়ে বের হতে কষ্ট হবে।

কতটুকু আঁশ প্রয়োজন

স্বাস্থ্যবান ও প্রাপ্তবয়স্ক নারীর দৈনিক ২৫ থেকে ২৮ গ্রাম ভোজ্য আঁশ দরকার আর পুরুষের দরকার ৩১ থেকে ৩৪ গ্রাম।

বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি থেকে ভোজ্য আঁশের সরবরাহ নিশ্চিত করাই হবে আদর্শ উপায়। সঙ্গে থাকতে হবে শষ্যজাতীয় খাবার, বাদাম ইত্যাদি।

Pin It