মহামারীর ‘চতুর্থ ঢেউয়ে’ বাংলাদেশ, মাস্ক ছাড়া যাবে না: ডা. আব্দুল্লাহ

ABM-Abdullah

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারীর বর্তমান অবস্থাকে ‘চতুর্থ ঢেউ’ হিসেবে চিহ্নিত করে সংক্রমণ এড়াতে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ সম্প্রতি বেড়ে যাওয়ার মধ্যে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্যে এই পরামর্শ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ইমিরিটারস অধ্যাপক।

এদিনই দেশে গত এক দিনে ২ হাজারের বেশি রোগী শনাক্তের খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যা গত ১৮ সপ্তাহে সর্বাধিক।

ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, “করোনার চতুর্থ ঢেউ মোকাবেলায় লকডাউনের মতো পদক্ষেপ প্রয়োজন পড়ে না। তবে বেপরোয়াভাবে চলাচল বা স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করা যাবে না। সব সময় মাস্ক পরতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।”

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপটে গত বছরের মাঝামাঝিতে আবার রোগী বেড়েছিল। এরপর বছরের শেষ ভাগ থেকে রোগী কমতে শুরু করে।

এখন আবার রোগী বাড়ার জন্য ওমিক্রনের দুটি সাব-ভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, “করোরাভাইরাসের নতুন ধরন দ্রুত ও ব্যাপকভাবে ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায় ১০ জনকে সংক্রমিত করে।”

“তবে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই,” আশ্বস্ত করে বলেন তিনি।

করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে এই পর্যন্ত ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৪ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছ থেকে, মারা গেছে ২৯ হাজার ১৪২ জন।

ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, “সকলের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, যেসব স্বাস্থ্যবিধি আছে, তা যথাযথভাবে মেনে চলুন।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে শুরুতে লকডাউনসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। পরে লকডাউন আর না থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়।

কিন্তু টিকাদানসহ নানা কারণে সংক্রমণের হার কমে আসার পর স্বাস্থ্যবিধি পালনে মানুষের উদাসীনতাও এখন লক্ষ্যণীয়। তবে সংক্রমণ ফের বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাস্ক বাধ্যতামূলক থাকার কথা আবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

টিকার বিষয়ে ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, “করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে হলে সবাইকে দ্রুত টিকা নিতে হবে। এই ব্যাধির নাকে নেওয়ার ওষুধের ট্রায়ালও শিগগিরই দেশে শুরু হতে পারে।”

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত এই চিকিৎসক বলেন, পাঁচ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

আলোচনা সভায় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, “করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে সবাইকে দ্রুত টিকা নেওয়া এবং করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এটাই এই মহামারী থেকে রক্ষার অন্যতম পথ।”

Pin It