মির্জা ফখরুলের উচিত সরকারকে সাধুবাদ জানানো : তথ্যমন্ত্রী

image-90361-1569061427

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের উচিত দেশে যেকোন অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযানের জন্য সরকারকে অভিনন্দন এবং সাধুবাদ জানানো। এবং নিজেদেও অতীতের অপকর্মের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজে অবৈধভাবে অর্জিত কালো টাকা সাদা করেছিলেন জরিমানা দিয়ে, কোকোর দুর্নীতি ধরা পড়েছে সিঙ্গাপুরে, তারেক রহমানের দূর্নীতির বিরুদ্ধে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। দুর্নীতির দায়ে তারেক রহমানের ১০ বছর সাজা হয়েছে। এতিম খানার জন্য টাকা এসেছে সে টাকা এতিম খানার একাউন্টে না রেখে নিজের ব্যক্তিগত একাউন্টে নিয়ে খালেদা জিয়া নিজে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেল খানায় আছেন। যাদের নেতা-নেত্রী দেশকে দুর্নীতিতে আকুণ্ঠ নিমজ্জিত করেছিল তাদেরতো এনিয়ে কথা বলার নৈতিক অধিকারই নেই।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে ‘দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটি চট্টগ্রাম’ আয়োজিত বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে ‘আওয়ামী লীগের দুর্নীতির কল বাতাসে উড়ছে’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তেব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটি-চট্টগ্রামের সভাপতি দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিশেষ অতিথি ছিলেন দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক আজহার মিয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক লায়ন এম এ শামসুল হক।

অনুষ্ঠানে সংগঠনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এ. এ. এম জিয়া হোসাইন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান শিক্ষাবিদ ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, কবি ও লেখক সাংবাদিক অরুণ দাশ গুপ্ত ও উদীচী চট্টগ্রামের সভাপতি লেখক বেগম মুশতারি শফিকে খ্যাতিমান বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক সম্মাননা প্রদান করা হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছিল। হাওয়া ভবন তৈরি করে সমস্ত ব্যবসা থেকে ১০ পার্সেন্ট করে কমিশন নেওয়া এবং দেশের সমস্ত ব্যবসার সঙ্গে হাওয়া ভবনের মাধ্যমে তারেক জিয়া ও বিএনপির বড় বড় মন্ত্রীদের সংশ্লিষ্টতা আমরা দেখেছি। বিএনপির অপকর্ম ও দুর্নীতির কারণেই তাদের শাসন আমলের পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছরই বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে দেশ পরিচালনা করছেন। সেকারণে দুর্নীতিদমন কমিশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি বা অনিয়ম যেগুলো হচ্ছে সেটির বিরুদ্ধে বর্তমানে ঢাকা শহরে অভিযান চলছে, চট্টগ্রামেও শুরু হয়েছে। দুনীতির বিরেুদ্ধে যে সরকার কঠোর অবস্থানে আছে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ। এ জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উচিত ছিল সরকারকে অভিনন্দন জানানো।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার হাতে পায়ের ব্যথা এটি বহু পুরনো সমস্যা। এই শারীরিক সমস্যা নিয়েই তিনি দুইবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দুইবার বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বিএনপির মতো দলের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সুতরাং এ সমস্যাকে সময়ে সময়ে একটু বলে বিএনপির নেতারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

সরকার খালেদা জিয়াকে দেশের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা পান সেব্যাপারে সরকার যত্নবান আছে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালে তাকে রাখা হয়েছে। দেশের প্রথিতযষা চিকিৎসকরা এই হাসপাতালের সাথে সংযুক্ত। তিনি যখন কারাগারে ছিলেন, তখনও সার্বক্ষণিক একজিন ফিজিওথেরাপিস্ট ও একজন চিকিৎসক নিয়োজিত ছিল। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলেও তার পছন্দনীয় আয়াকে সাথে রেখেছেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাবে মদ জুয়াসহ নানা অনৈতিক আসর বসে এতে যুবসমাজ বিপথগামী হচ্ছে ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও কোন অভিযানের সুযোগ আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ঢাকায় অভিযান চলছে চট্টগ্রামেও হয়েছে। একেবারে হয়নি তা নয়। যেখানেই অনিয়ম পাওয়া যাবে সেখানেই এধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিনিয়র সিটিজেনদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা রাষ্ট্রকে উন্নত করার পাশাপাশি একটি সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এস্টেট ও মানবিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। দেশের দুঃস্থ সিনিয়র সিটিজেনদের কথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্কভাতা চালু করেছেন। প্রতিবছর বয়স্ক ভাতার পরিমাণ ও পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। ইউরোপের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এস্টেট গুলোতে সর্বক্ষেত্রে পেনশন চালু আছে। সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যাতে সিনিয়র সিটিজেনরা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুযোগ সুবিধা পান।

Pin It