যুদ্ধ হলে সবার ক্ষতি, ট্রাম্পের লাভ

image-101898-1578064093

ইরানের সেনা প্রধান কাসিম সোলেইমানিকে হত্যা করে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছে ইরান।

এখন প্রশ্ন উঠছে কি চাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প?ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ট্রাম্প নিজের দেশেই ভালো নেই। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সেনেটে তার ইমপিচমেন্টের বিষয়টি আলোচনায় ওঠার কথা। তার আগে ইরাকে বিমান হামলায় জেনারেল কাসিম সোলেইমানিকে হত্যা করে নিজের দেশের সবার নজর অন্য দিকে ভালোভাবেই সরাতে পেরেছেন ট্রাম্প।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা প্রত্যাশিতভাবেই অন্যায় হামলায় এলিট বাহিনীর প্রধানকে হত্যার বদলা নিতে চেয়েছেন। অন্যদিকে সোলেইমানি নিহত হওয়ার পর টুইটার অ্যাকাউন্টে মার্কিন পতাকা শেয়ার করে একরকম আনন্দই প্রকাশ করেছেন ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট’ স্লোগানের মাধ্যমে উগ্রতা, বিভেদ আর ঔদ্ধত্বের প্রবক্ত হয়ে ওঠা ট্রাম্প।

ট্রাম্প যে ইচ্ছে করেই যুদ্ধপরিস্থিতি তৈরি করেছেন তা বুঝতে বেশিদূর যেতে হবে না। দু’দিন আগেই নিজের টুইট বার্তায় লিখেছিলেন বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে ‘কোনো প্রাণহানি বা আমাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে তার জন্য ইরানই দায়ী থাকবে। সেজন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে। এটা কোনো সতর্কবার্তা নয়, এটা হুমকি।’

মধ্যপ্রাচ্যের একাংশে নেমেছে শোকের ছায়া, বাড়ছে ক্ষোভ আর আতঙ্ক৷ তার প্রভাব সারা বিশ্বেই পড়বে। তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মার্কিন হামলায় সোলেইমানির সঙ্গে ইরাকি কমান্ডার আবু মাহদি আল মুহান্দিসসহ আরো চারজন নিহত হয়েছেন। তাই ইরাকও ক্ষুব্ধ। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদেল মাহদি ইতিমধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

যুদ্ধ হলে সবচেয়ে বেশি লাভ হবে ট্রাম্পের। দেশে যে কিছুটা কোণঠাসা অবস্থায় পড়েছিলেন সে অবস্থা হয়ত খানিকটা কাটিয়ে উঠতে পারবেন। আর লাভ অস্ত্রবিক্রেতাদের।

তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ইরান আর ইরাকের। সেই দেশ দুটোর সাধারণ মানুষের। আশির দশকে প্রায় আট বছর নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করেছে তারা। সেই যুদ্ধ শেষেও ইরাকের মানুষ বেশিদিন শান্তিতে থাকতে পারেনি। ১৯৯০ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত চলা উপসাগরীয় যুদ্ধের ক্ষত শুকানোর আগে ২০০৩ সালে আবার পড়ে যুদ্ধের খপ্পরে। আট বছরের সেই যুদ্ধে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার দেশটি হয়ে যায় ধংসস্তূপ।

যুদ্ধ হলে বাংলাদেশের জন্যও বিপদ। মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছেন এমন বাংলাদেশিরা সংকটে পড়বেন। তার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তো পড়বেই।

Pin It