সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিরপ্রস্থান

image-199107-1605424231

সত্যজিত রায়ের অপু আর ফেলুদা চরিত্রকে রূপালী পর্দায় অমর করে দিয়ে চিরবিদায় নিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

দীর্ঘ দিন লড়াইয়ের পর মৃত্যুর কাছে হার মানলেন সত্যজিৎ রায়ের অপু খ্যাত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। রবিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। কলকাতার একাধিক গণমাধ্যম তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে।

ওপার বাংলার সিনেমার বর্ষীয়ান এই অভিনেতা করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৬ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরপর কয়েক দফায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ও উন্নতির খবর পাওয়া যায়। করোনা থেকে মুক্ত হয়েছিলেন সৌমিত্র। এর শনিবার (১৪ নভেম্বর) রাত থেকেই অবস্থার আরও অবনতি হতে শুরু করে। আজ সকালে সেটা আরও বেশি হয়। তবে অন্যান্য জটিল রোগের কাছে পরাস্ত হয়ে আজ পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন এই কিংবদন্তি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় করোনার সঙ্গে একাধিক রোগে ভুগছিলেন। তিনি প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। এটা নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছিল ফুসফুস ও মস্তিষ্কে। মূত্রথলিতেও সংক্রমণ হয়েছিল তার। এতকিছুর সঙ্গে এই বার্ধক্যে তার শরীর লড়াই করে উঠতে পারছিল না।

ভারত সরকার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ২০০৪ সালে ‘পদ্মভূষণ’ ও ২০১২ সালে ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’ দিয়ে সম্মানিত করেছে। এছাড়াও ২০১৭ সালে তিনি ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ‘লিজিওন অব অনার’ লাভ করেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার একই বছরে তাকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কার প্রদান করে। তবে ২০১৩ সালে এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে হলো- অপুর সংসার (১৯৫৯), ক্ষুদিত পাষাণ (১৯৬০), দেবী (১৯৬০), তিন কন্যা (১৯৬১), ঝিন্দের বন্দী (১৯৬১), অতল জলের আহ্বান (১৯৬২), বেনারসী (১৯৬২), অভিজান (১৯৬২), সাত পাকে বাঁধা (১৯৬৩), চারুলতা (১৯৬৪), কিনু গোয়ালার গলি (১৯৬৪), বাক্স বদল (১৯৬৫), কাপুরুষ (১৯৬৫), একই অঙ্গে এত রূপ (১৯৬৫), আকাশ কুসুম (১৯৬৫), মণিহার (১৯৬৬), কাঁচ কাটা হীরে (১৯৬৬), হাটে বাজারে (১৯৬৭), অজানা শপথ (১৯৬৭), বাঘিনী (১৯৬৮), তিন ভুবনের পারে (১৯৬৯), পরিণীতা (১৯৬৯), অপরিচিত (১৯৬৯), অরণ্যের দিনরাত্রি (১৯৭০)।

Pin It