নিথর দেহে শহীদ মিনারে বুলবুল, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

1-5c480095732fd

দেশবরেণ্য গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গুণী এ শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। এ সময় বুলবুলের দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা শেষবারের মতো তাকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বুধবার বেলা পৌনে ১১টায় তার মরদেহ সেখানে নেয়া হয়। সর্বসাধারণের জন্য মরদেহ শহীদ মিনারের বেদিতে রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে সর্বস্তরের জনসাধারণ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।

অসংখ্য বাংলা জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল মঙ্গলবার ভোররাতে রাজধানীর আফতাব নগরের বাসায় হার্টঅ্যাটাকে মারা যান। ৬৩ বছর বয়সে তার চিরবিদায়ে থেমে গেছে প্রিয় পিয়ানোর সুর।

‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’, ‘সেই রেললাইনের ধারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যখানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘আমি তোমারি প্রেমভিখারি’, ‘ও মাঝি নাও ছাইড়া দে’, ‘তোমায় দেখলে মনে হয়’, ‘আম্মাজান’, ‘পড়ে না চোখের পলক’সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যুতে সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। কৈশোরেই সঙ্গীতের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। ১৯৭০ সালের শেষ প্রান্ত থেকে আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্রসহ অডিও অঙ্গনে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করে গেছেন তিনি। ১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। সৈয়দ আবদুল হাদী, সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, খালিদ হাসান মিলু, আগুন, আইয়ুব বাচ্চু, কনক চাঁপা, মনির খানসহ আরও অনেক জনপ্রিয় ও তরুণ কণ্ঠশিল্পীকে নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর টানা দেড় দশক শুধু দেশাত্মবোধক গান তৈরি করেছেন তিনি। সঙ্গীতে অবদানের জন্য আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

Pin It