কলকাতায় নির্মিত ঐতিহ্যবাহী গেটটি খুলে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এটি খোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ‘কলকাতা গেট’ নামে পরিচিত এই ফটকের বর্তমান নামকরণ করা হয়েছে ‘বিশ্ব বাংলা গেট’।
কলকাতা মহানগরীর নতুন উপশহর রাজারহাটের নারকেলবাগান মোড়ে এই গেটের অবস্থান। এটির কাছেই কবিগুরুর স্মরণে তৈরি রবীন্দ্র তীর্থ। একটু দূরেই আবার কবি নজরুলের স্মরণে তৈরি নজরুল তীর্থ। কাছেই মোমের জাদুঘর, ইকোপার্ক। নেতাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও অনেকটা কাছে।
২৫ মিটার উঁচু আর ২০০ মিটার বৃত্তাকারে ইস্পাত দিয়ে তৈরি এই গেটের নির্মাণকাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এটি নির্মাণ করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল হাউজিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (হিডকো)। বৃত্তাকার এই গেটে রয়েছে ত্রিস্তরীয় ৩৮ মিলিমিটারের ল্যামিনেটেড গ্লাস। এই ফটকে উঠে দেখা যাবে রাজারহাটে তৈরি নতুন কলকাতা উপশহরের অপরূপ শোভা।
সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই গেটের বৃত্তাকারের মাঝ বরাবরে থাকছে ক্যাফেটেরিয়া, রেস্তোরাঁ, কিউরিও শপ, ফটো গ্যালারি ও ভিআইপি লাউঞ্জ। উপড়ে উঠতে রয়েছে দুটি লিফট। একটিতে ৮ জন একসঙ্গে উঠতে পারবেন। ওপরে একসঙ্গে ৮০-৯০ জন বসতে পারবেন। খেতে পারবেন। ভেতরের ৪ মিটার চওড়া বৃত্তের দেওয়ালে আঁকা হয়েছে বাংলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান এবং মনীষীদের ছবি। রয়েছে অভ্যর্থনা ডেস্ক। গেটের বাইরে লাগানো হয়েছে ১৬টি সিসি টিভি ক্যামেরা আর ভেতরে লাগানো হয়েছে ২৪টি। আছে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য রাখা রয়েছে সিঁড়িও। বলা হচ্ছে, ভূমিকম্পের দাপট সইতে পারবে এই গেট। গেটের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিধাননগর পুলিশকে।এই গেটে উঠতে হলে টিকিট কাটতে হবে। তবে দর্শনার্থী লাগেজ, প্লাস্টিক ব্যাগ, পানির বোতল, সিগারেট, দেশলাই, লাইটার নিয়ে উঠতে পারবেন না। তবে মোবাইলে সেলফি তোলার সুযোগ পাবেন। বাণিজ্যিক ছবি তুলতে গেলে অনুমতি নিতে হবে। গেটের ওপরে একবারে ৮০-৯০ জন ওঠার পর তাঁদের একসঙ্গে এক ঘণ্টা করে সময় কাটানোর সুযোগ দেওয়া হবে। এই দলটি নিচে নেমে এলে পরবর্তী দলকে গেটে তোলা হবে। অপেক্ষমাণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকিট কাউন্টারের সামনে আছে ওয়েটিং লাউঞ্জ।