গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা অর্ধদিবস হরতালে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি।
শুক্রবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, “বাম দল যারা আছেন তারা আগামী ৭ জুলাই হরতাল আহ্বান করেছেন। আমরা এই হরতালের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানাচ্ছি।
“সারা দেশের মানুষ এই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেই কারণে এটা একটা যৌক্তিক হরতাল বলে আমরা মনে করি। সেই কারণেই এই হরতালে আমরা নীতিগত সমর্থন জানাচ্ছি।”
উচ্চ দামে আমদানি করা এলপিজিতে ভর্তুকির ভার লাঘবের জন্য সমাজের বিভিন্ন অংশের আপত্তির মধ্যেই সম্প্রতি সব পর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ৩২.৮ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার।
এর প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে আধা বেলা হরতালের ডাক দিয়েছে বামপন্থি দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোট।
তাদের এই হরতালে ইতোমধ্যে সমর্থন জানিয়েছে কামাল হোসেনের গণফোরাম, আ স ম আবদুর রবের জেএসডি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য ও অলি আহমেদের এলডিপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, “জাতীয় স্থায়ী কমিটি মনে করে, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। শুধু মাত্র দুর্নীতির যে ধাপগুলো আছে বিশেষ করে গ্যাস ও জ্বালানি তেল সংক্রান্ত এসবকে অর্থায়ন করার জন্য মূলত গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হয়েছে।
“গ্যাসের এই মূল্য বৃদ্ধির ফলে সমগ্র অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং সেটা অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলেই স্থায়ী কমিটি মনে করে। এতে করে প্রত্যেকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়বে, শিল্প উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ১ জুলাই জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে বিএনপি।
“জনগণের সর্বস্তর থেকে এই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ হয়েছে। বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল কর্মসূচি দিয়েছে, নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু সরকার এটাকে মেনে নেয়নি অর্থাৎ মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেনি,” বলেন ফখরুল।
বিএনপি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আর কোনো কর্মসূচি দেবে কি না প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। বাম দলের কর্মসূচিতে সমর্থন দিলাম।এরপর আমরা চেষ্টা করব যদি অন্য কোনো কর্মসূচি দেওয়া যায়।”
বিকাল ৪টা থেকে দুই ঘণ্টা গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে মহাসচিব ছাড়াও খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।