পাবনায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত মিনার ভেঙে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাবার মুর্যাল তৈরি করা হয়েছে।
সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের এ ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কলেজ পরিচালনা কমিটি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পরামর্শে জায়গা নির্ধারণ করে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের অর্থায়নে মুর্যাল নির্মাণ করা হচ্ছে।
“শহীদ মিনারটি জীর্ণ দশায় ছিল। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির পূর্বেই কলেজ মাঠের দক্ষিণ পাশে বড় পরিসরে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।”
তিনি বলেন, “এমপি মহোদয়ের পিতা মরহুম তফিজ উদ্দিন আহমেদ যেহেতু সাবেক সংসদ সদস্য এবং তিনি কলেজটিতে বিভিন্ন সময়ে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন, তাই তার স্মৃতি রক্ষার্থে এই মুর্যালটি নির্মিত হচ্ছে।”
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো স্থানে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার ভেঙে ব্যক্তি বিশেষের মুর্যাল তৈরি করা চরম নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ। তারা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সভাপতি স্বীকার করলেও সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছেদ বাচ্চু বলেন, “কে বা কারা এমপি মহোদয়ের পিতার মুর্যাল নির্মাণ করছেন, আমার কিছুই জানা নেই।”
তবে এতে কোনো সমস্যা দেখছেন না তিনি।
অধ্যক্ষ বাছেদ বলেন, “শহীদ মিনারের নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই, যে কোনো জায়গায় স্থাপন করা যায়। শহীদ মিনার ভেঙে মুর্যার নির্মাণে সমস্যা কোথায়? তবে শহীদ মিনার অচিরেই করা হবে।”
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই, খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। তবে এটি মূলত নীতি নৈতিকতার বিষয়।”
শহীদ মিনার ভেঙে মুর্যাল নির্মাণের বিষয়টি ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের দুটি মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে এসএমএস পাঠিয়েও কথা বলার চেষ্টা করে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।