‘ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এখন একত্রিত’

image-130030-1581510942

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘ওয়ান ইলেভেন’ এর কুশীলবরা এবং বিএনপি-জামায়াত চক্র এখন একত্রিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রকে বিরাজনীতিকরণের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে সেদিন এক-এগারো সৃষ্টি করা হয়েছিল। সেই অপচেষ্টায় যারা যুক্ত ছিল, তারা এখনও সক্রিয়। আজকেও সূক্ষ্মভাবে সেই অপচেষ্টা আছে।’

বুধবার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর ‘আমার দেখা ওয়ান ইলেভেন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে এটি প্রমাণিত যে, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল, নেতৃত্বের গুণাবলী, সাহস ও দূরদৃষ্টির কাছে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ প্রচণ্ডভাবে পরাজিত। বিএনপি এবং তার দোসরেরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণেই তারা ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে তারা ‘ওয়ান ইলেভেনে’র কুশীলবদের সাথে হাত মিলিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’

‘ওয়ান ইলেভেন’ সংঘটনের কারণ চিহ্নিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানত: দুটি কারণে ওয়ান ইলেভেন হয়েছিল। একটি হচ্ছে বিএনপির লাগামহীন দুর্নীতি, সরকার পরিচালনায় প্রচণ্ড অব্যবস্থাপনা, হাওয়া ভবন তৈরি করে সমান্তরাল সরকার ব্যবস্থাপনা তৈরি করা এবং আরেকটি হচ্ছে দেশে জঙ্গিবাদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা। এ সমস্ত কারণে দেশে যে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তারা তৈরি করেছিল, সেটিরই সুযোগ গ্রহণ করেছিল যারা বিরাজনীতিকরণ করতে চায়।’

ড. হাছান আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি পক্ষ আছে যারা মনে করে, যারা রাজনীতি করে, তারা লেখাপড়া কম জানে, অনেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত। এমন মনোভাব যাদের মধ্যে আছে, তাদের সবসময় একটি চেষ্টা থাকে বিরাজনীতিকরণের জন্য। এটি পাকিস্তান আমলেও ছিল, পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান মার্শাল ল জারি করেছিল। কিন্তু তা কোনোভাবেই গণতন্ত্রের সাথে যায়না।’

‘এক-এগারোর পট পরিবর্তনের পর জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং তার মুক্তির মাধ্যমে শুধু শেখ হাসিনার মুক্তি নয়, গণতন্ত্রেরও মুক্তি লাভ হয়েছিল’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘তার (শেখ হাসিনার) হাত ধরে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং দেশ আজ মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। শেখ হাসিনা এখন শুধু আওয়ামী লীগের সভাপতি নন, শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, শেখ হাসিনা এখন পৃথিবীর অনুকরণীয় প্রধানমন্ত্রী, পৃথিবীর অনুকরণীয় রাষ্ট্রনায়ক।’ শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন, শেখ হাসিনা এখন বিশ্বনেত্রী হিসেবে অধিষ্ঠিত, বলেন তিনি।

সাংবাদিক লেখক সৈয়দ বোরহান কবীরের সভাপতিত্বে গ্রন্থকার প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, কলামিস্ট সুভাষ সিংহ রায়, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ, কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের জাতীয় সমন্বয়ক ডা. শাহানা পারভীন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ।

‘আমার দেখা ওয়ান ইলেভেন’ শিরোনামে বইটির জন্য লেখককে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে এই প্রথম পুস্তক, এইজন্য তাকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ, কি ঘটেছিল সে বিষয়গুলো মানুষকে জানানোর জন্য এ ধরণের একটি বই প্রচণ্ড প্রয়োজন ছিল, যেটির প্রয়োজনীয়তা কিছুটা হলেও লাঘব করেছে বা করবে এই বইটি।’

এই বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে অনেক অজানা ইতিহাস উঠে এসেছে বলে জানান ড. হাছান মাহমুদ।

Pin It