পুব আকাশের সূর্যটা গায়ে হেলান দিয়ে পশ্চিমে অস্তের পথে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ঠিক সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা গেয়ে উঠলেন ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’ সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে উঠল এক লাখ মোমবাতি। ‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ স্লোগানে নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে তখন আলোর ফেয়ারা। একুশের ভাষা শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার এই আয়োজন করে নড়াইল একুশের আলো। আর্থিক সহযোগিতায় ছিল স্কয়ার।
এসময় প্রদীপের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৬৯তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ৬৯টি ফানুস উড়িয়ে দেন।
নড়াইল একুশের আলোর আহ্বায়ক প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নাট্য ব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার প্রমুখ।
প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান বলেন, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা মুক্ত সুখি, সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধারণ করে প্রতি বছর আমাদের এই আয়োজন। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর মুক্তির আলোকচ্ছটায় দীপ্যমান হয়ে উঠুক- এ কামনা আমাদের।
প্রতি বছরের মতো এবারও নড়াইলবাসী, ঢাকাসহ পাশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী এ মনোরম দৃশ্য উপভোগ করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সাল থেকে নড়াইলে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন হচ্ছে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে এবারের আয়োজনটি বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।