আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভায় নেতাদের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে।
রোববার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ হয়। সমাবেশের পর একটি শোভাযাত্রাও বের করে মহিলা দল।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শোভাযাত্রা শুরুর আগে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সমবেত ছিলেন মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা।
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় ১১টায় সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ১১টা ২০ মিনিটে এসে সমাবেশ চলতে দেখে ক্ষোভ জানান। তিনি প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর না আসা পর্যন্ত সমাবেশের কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।
কিন্তু হেলেন জেরিন খান মাইকে সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিত হওয়ার ঘোষণা দিলেও শামসুন্নাহার ভুইয়াকে বক্তৃতা দেওয়ার আহ্বান জানালে সুলতানা মাইক নিয়ে তা ছুড়ে ফেলতে উদ্যত হন।
এতে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হলে মহিলা দলের কর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
সংগঠনের সহসভাপতি জেবা খান তখন সাধারণ সম্পাদকের কাছে এসে ঘটনাটি ‘সাংবাদিকরা দেখছেন’ বললেও সুলতানার ক্ষোভ থামেনি।
এই সময়ে মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসকে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এই পর্যায়ে কার্যালয়ের ভেতরে তৃতীয় তলায় থাকা বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ডেকে পাঠান মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদককে।
পরে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে মির্জা ফখরুল মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস ও সুলতানা আহমেদসহকে নিয়ে সমাবেশে আসেন।
মহিলা দলের শোভাযাত্রা ও সমাবেশের সময় নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়েছিল।
খালেদাকে মুক্ত করতে আহ্বান
নারী দিবসের কর্মসূচিতে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জোরদার আন্দোলনের জন্য মহিলা দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল।
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র ফিরে না এলে নারীদের যে অধিকার, সেই অধিকারকে ফিরে পাওয়া যাবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাকে মুক্ত করতে না পারলে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না।
“আসুন মা-বোনেরা আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করি এবং দেশনেত্রীকে মুক্ত করবার জন্য সংগ্রাম করি। এটাই হোক আজকে আন্তর্জাতিক দিবসের শপথ।”
ফখরুল বলেন, “যখন আপনারা আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করছেন, তখন এই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, যিনি এদেশের নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছেন, সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।”
পরিবারে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, আমাদের দেশের মহিলারা অত্যন্ত নিষ্ঠাবান কর্মী এবং তারা পরিবারগুলোকে ধরে রাখেন, তারাই পরিবারের জন্য কাজ করেন।
“আজকে নারীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই বার্তা পৌঁছাতে হবে যে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। গণতন্ত্র ফিরে না আসলে নারীদের যে অধিকার সেই অধিকারকে ফিরে পাওয়া যাবে না।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন নুরী আরা সাফা, নুর জাহান ইয়াসমীন, হেলেন জেরিন খান, রাশেদা বেগম হীরা, জেবা খান, ইয়াসমীন আরা হক, নেওয়াজ হালিমা আরলী, ফাহিমা হোসেন জুবলী, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া, মমতাজ করীম, সূচনা আখতার।