বাংলাদেশের জিডিপি নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তার মতে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে প্রবৃদ্ধি কমলেও সেটি ৬ শতাংশের ওপরে থাকবে।
রোববার প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হার নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ২ থেকে ৩ শতাংশে।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিক্রিয়া জানান।
নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর বিস্তার অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত চার দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয় বিশ্ব ব্যাংক।
এর মধ্যে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার সরকারি প্রাক্কলনের অর্ধেকেরও বেশি কমে ২-৩ শতাংশের মধ্যে নেমে আসতে পারে। কোভিড-১৯ মহামারীর চলমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রোববার এ পূর্বাভাস দেয় বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মুস্তফা কামাল বলেন, “বাংলাদেশের জিডিপি নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের এ পূর্বাভাস সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, কেননা এখনই এটা বলার সময় আসেনি। বিশেষ করে অঙ্ক ধরে বলার উপযুক্ত সময় এটা নয় ।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সামনে তো ৮ মাসের তথ্য রয়েছেই। সেগুলো যাচাই করে কিছুদিন আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে এবার আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। ফলে বিশ্ব ব্যাংকের এই পূর্বাভাসকে আমি সময় উপযোগী বা পরিপক্ক কোনোটাই মনে করি না।”
করোনাভাইরাসের প্রভাবে সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশের জিডিপিও কমবে তবে এতটা কমবে না আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “কমপক্ষে ৬ শতাংশের ওপরে জিডিপি এ বছরও আমরা অর্জন করতে সক্ষম হব। কেননা বাংলাদেশে করোনার প্রভাব পড়ার আগেই আমাদের অর্থবছরের ৮ মাস অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। বাকি আছে মার্চ-জুন চার মাস। এ সময়ে যদি আমাদের শূন্য কিংবা নেগেটিভ গ্রোথও হয় তারপরও আগের ৮ মাসে আমরা যা অর্জন করেছি সেটা ৬ শতাংশের বেশিই হবে।
“অর্থনীতির চেয়ে এখন সবচেয়ে বড় অগ্রধিকার দেশের মানুষের জীবন রক্ষা করা। তাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, খাবারের যোগান দেওয়াসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করাই এখন আমাদের মৌলিক কাজ।”
কৃষি, শিল্প ও সেবা প্রবৃদ্ধির প্রধান তিনটি খাতের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কৃষিখাতে করোনাভাইরাসের তেমন কোনো প্রভাব পড়েইনি। এটা যদি দীর্ঘায়িত না হয় তাহলে কৃষিখাতে আমরা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সম্পূর্ণ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হব।
“শিল্প খাতে কিছুটা প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এটা কাটানোর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগও নিয়েছি। একইভাবে সেবা খাতেও কিছুটা প্রভাব পড়ছে।”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা স্বীকার করছি প্রবৃদ্ধি কমবে, কিন্তু এতোটা কমবে না। আমাদের প্রার্থনা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ এ বিশ্ব মহামারী থেকে রক্ষা পাক।”