সাহেদদের গডফাদাররা তো ধরা পড়ছেন না: রিজভী

rizvi-130720-01

করোনাভাইরাস শনাক্তের সনদ জালিয়াতির জন্য আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথকেয়ারের কর্ণধারদের যারা মদদ দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার দুপুরে ‘করোনা প্রতিরোধে লক্ষণভিত্তিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা’ ক্যাম্পের উদ্বোধনের সময় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই প্রশ্ন তুলেন।

তিনি বলেন, সাহেদ ও জেকেজি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের লোক। এদের মধ্যে একজন কালকে ‘নামমাত্র’ ধরা পড়লেন। এদের পেছনে গডফাদার কারা? পেছনের সেই ক্ষমতাশালী লোকরা কারা? কই তারা তো ধরা পড়ছেন না।

“সাহেদের সাথে, জেকেজির সাথে আরো জড়িত যারা আছে, তাদেরকে তো আপনারা ধরতে পারবেন না। রুই-কাতলাদের আপনারা ধরতে পারবেন না। কারণ ওরা ক্ষমতাশালী লোক।”

রিজভী বলেন, পত্র-পত্রিকা, গণমাধ্যম চারিদিকে ছিছি পড়ে গেছে। আওয়ামী লীগের এমন কোনো নেতা নাই, যার সাথে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিকের সম্পর্ক নাই।

“ছবি তুলেছেন সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুমোদন দিয়েছে তাদেরকে করোনা টেস্ট করার জন্য। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি যখন অনুমোদন দেয়, সেটা তো সরকারেরই অনুমোদন।”

রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মো. সাহেদের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “উনি সরকারের পক্ষে টকশো করছেন, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সদস্য তিনি। তারপরে বললেন কি? সে নাকি হওয়া ভবনের লোক। যখন ফাঁস হয়ে যায়, যখন মুখ দেখানোর থাকে না, তখন বিএনপি অথবা হাওয়া ভবনের বলে চাপিয়ে দেয় তারা।”

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তাদের মধ্যে মানবতার কোনো কাজ নেই, তাদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কোনো কাজ নেই।

“জনগণের পকেট থেকে টাকা দিয়ে যে ত্রাণ কেনা হয়েছে সেই ত্রাণ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসা থেকে, না হলে গ্যারেজ থেকে, না হলে পুকুর থেকে না হলে মাটির তলা থেকে পাওয়া গেছে। এভাবে তারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।”

বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন নিজের পকেট থেকে অর্থ দিয়ে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে দাবি করেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘‘ কয়েকদিন ধরে আপনারা দেখছেন সংবাদপত্রের পাতায় আগের কথা না-ই বা বললাম। মাস্কের দুর্নীতি কে করেছে? মন্ত্রীর ছেলে। করোনার জন্য জীবন বাঁচানোর মেশিন ভ্যান্টিলেটর, সেই ভেন্টিলেটর দুর্নীতির সাথে জড়িত কে? ক্ষমতাসীন দলের লোক অথবা মন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজন।”

বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারের দমননীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আপনি একটি মাসুম বাচ্চা মেয়ে মাহমুদা পলি তাকে রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে এসেছেন। কেন? সে ফেসবুকে লিখেছেন সরকারের বিরুদ্ধে। এখনো সে কারাগারে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা টিটো হায়দার আজকে ৪/৫ দিন আগে তুলে নিয়ে গেছেন। সবাই দেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারি লোকেরা তাকে ধরে নিয়ে গেছে।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হোমিওপ্যাথিক ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এইচ ড্যাব) উদ্যোগে কোভিড-১৯ ভাইরাস মোকাবিলায় মেডিকেল ক্যাম্প ও ফ্রি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বিতরণের এই অনুষ্ঠান হয়।

সংগঠনের সভাপতি শফিকুল আলম নাদিমের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব একেএম জাকির হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সম্মিলিত হোমিওপ্যাথিক জোটের সভাপতি আরিফুর রহমান মোল্লা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক মুজিব উল্লাহ, মুজিব, গাজী নাজিমউদ্দিন, কাশেমুর রহমান খান, আশরাফ হিলালী, শাহ মোয়াজ্জেম সোহেল, ফয়সাল মেহবুব মিজু উপস্থিত ছিলেন।

Pin It