সম্প্রতি চীন তার প্রতিবেশী ও পশ্চিমের দেশগুলোকে উসকে দেওয়ার লক্ষ্যে দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলে উপকূলরক্ষী জাহাজ পাঠিয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস বলছে, ১ জুলাই চীনের হায়নান প্রদেশের সানিয়া বন্দর ত্যাগ করে চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজ-৫৪০২। জাহাজ চলাচল সংক্রান্ত তথ্য বলছে, ২ জুলাই স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জে চীনের সামরিক ঘাঁটি সুবি রিফে থামে জাহাজটি।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক র্যান্ড করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং ম্যারিন কর্পস ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অ্যান্ড্রু স্কবেল মনে করেন, এটি চীনের দাবি প্রতিষ্ঠায় নিজেদের সব ধরনের রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যবহার করার কৌশল।
স্কবেল বলেন, ‘চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজের অনেকগুলোই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নৌবাহিনীর অধিকাংশ যুদ্ধ জাহাজের চেয়েও অনেক বড়। এসবই দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের স্বার্থ হাসিল এবং রাষ্ট্রীয় সব শক্তি ব্যবহার করে তাদের দাবি জোরালো করা এবং একইসঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনের প্রয়াস।’
তিনি বলেন, ‘তারা উসকানি, চাপ, পেশীশক্তি ব্যবহারের কৌশল নিয়েছে। কিন্তু একইসঙ্গে তারা মূলা দেখিয়ে প্রকাশ্য সমস্যার যৌক্তিক ও মধ্যস্থতাকারী সমাধান চাইছে।’
৩০ জুন ভিয়েতনামের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে হাই ইয়াং ডি ঝি-৪ নামে আরেকটি জাহাজ পাঠায় চীন, যা বর্তমানে চীনা উপকূলরক্ষী জাহাজ-৫৪০২ যেখানে রয়েছে, তার থেকে ১৬৫ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।
জবাবে মার্কিন নৌবাহিনী তাদের রণতরী ইউএসএস গ্যাব্রিয়েল গিফোর্ডসের একটি ছবি প্রকাশ করে, যা হাই ইয়াং-৪ থেকে মাত্র কয়েকশ’ গজ দূরেই অবস্থান করছে।
চীনকে সুস্পষ্ট সংকেত পাঠানোর উদ্দেশ্যে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিটজ এবং ইউএসএস রোনাল্ড রেগান দক্ষিণ চীন সাগরে মোতায়েন করা আছে।
ইউএসএস রোনাল্ড রেগানের অধিনায়ক প্যাট হানিফিন বলেন, ‘আমরা আমাদের মিত্রদের প্রতি এবং একটি স্বাধীন ও মুক্ত ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। ইউএসএস রোনাল্ড রেগানের মতো মারাত্মক বিমানবাহী রণতরী বিশ্বে আর কোথাও নেই। নিমিটজের সঙ্গে এসব অভিযান প্রমাণ করে যে, আমরা বিশাল ও সমভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি নৌবাহিনীর অংশ।’
দক্ষিণ চীন সাগর তিনটি দ্বীপপুঞ্জে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জ এবং স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ। চীন প্রায় সমগ্র দক্ষিণ চীন সাগর তাদের সার্বভৌম অঞ্চল বলে দাবি করে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা এ দাবি সহিংসতার সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে।
প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দাবি করে চীন, তাইওয়ান এবং ভিয়েতনাম। তবে চীন এ অঞ্চল দখল করে রেখেছে।
অন্যদিকে স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দাবি করে চীন, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন এবং ব্রুনেই।