বাংলাদেশকে ‘ঈদ উপহার’ ১০ টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ হস্তান্তর

image-170479-1595856274

বাংলাদেশকে ‘ঈদ উপহার’ হিসেবে ১০ টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ হস্তান্তর করেছে ভারত। আজ এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর এবং রেল, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের উপস্থিতে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভের বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা সূচনা করে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের রেলপথ প্রতিমন্ত্রী শ্রী অঙ্গদি সুরেশ। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবুল কালাম আব্দুল মোমেন এবং রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন লোকোমোটিভগুলো গ্রহণ করেন।

এ সময় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ভারতীয় রেলওয়ে আমাদের ১০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন ‘ঈদ উপহার’ হিসেবে দিচ্ছে। ইঞ্জিনগুলো হস্তান্তরে ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে বিকেল ৪টায় দর্শনা স্টেশনে এসে পৌঁছায়।

ভারত সরকারের অনুদান সহায়তায় এই লোকোমোটিভগুলির হস্তান্তর, ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি পূরণ করে। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে লোকোমোটিভগুলিকে যথাযথভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। এই লোকোমোটিভগুলি বাংলাদেশে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে রচিত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার কালোত্তীর্ণ সম্পর্কের গভীরতার কথা তুলে ধরেন। কোভিড-১৯ মহামারীতেও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার গতি হ্রাস না পাওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন যে, চলমান ঐতিহাসিক মুজিববর্ষে তিনি এ জাতীয় আরও মাইলফলক অতিক্রম করার প্রত্যাশা করছেন।

ভারতের রেলপথ,শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধিতে এবং দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করতে রেল সহযোগিতার তাত্পর্যকে গুরুত্ব দেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, আমি বাংলাদেশের কাছে ১০ টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে আনন্দিত। এর মাধ্যমে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত অক্টোবরের ভারত সফরের সময় আমাদের পক্ষ থেকে দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সক্ষম হলাম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের ‘সোনালী অধ্যায়’ রচনা চলমান রয়েছে। বিশ্বের খুব কম দেশের মধ্যেই আমাদের মতো ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের অংশীদারিত্ব আজ এই অঞ্চলে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের ক্ষেত্রে আদর্শ হিসেবে বিবেচিত।

সাম্প্রতিক সময়ে স্থল সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য বাধাগ্রস্থ হওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব হ্রাস করতে রেল সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করেছে। ব্যয় সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব বাহন হিসাবে রেল আন্তঃসীমান্ত পণ্য পরিবহণে সহায়তা করেছে। জুন মাসে দু’দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মালবাহী ট্রেন চলাচল হয়েছিল। প্রয়োজনীয় পণ্য এবং কাঁচামাল বহনের জন্য মোট ১০৩টি মালবাহী ট্রেন ব্যবহৃত হয়।

সম্প্রতি, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্সেল এবং কনটেইনার ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়েছে। এতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Pin It