বাংলাদেশ থেকে আপলোড হওয়া ‘আপত্তিকর’ ভিডিও সোশাল ভিডিওঅ্যাপ টিকটক কর্তৃপক্ষ সরিয়ে ফেলার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযাগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
কয়েকটি ভিডিওর বিষয়ে আপত্তি জানানোর পর ইতোমধ্যে টিকটক সেগুলো সরিয়ে ফেলেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
টিকটক বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানান টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার বৃহস্পতিবার বলেন, “বুধবার রাতে আপত্তিকর ভিডিও নিয়ে টিকটক কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হওয়ার পর তারা আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে আপলোড হওয়া আপত্তিকর ভিডিওগুলো তারা রিভিউ করে সরিয়ে ফেলবে।”
গত বছর টিকটক ও অনলাইন গেইম প্লেয়ারআননোনস ব্যাটলগ্রাউন্ড (পিইউবিজি) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “সেবার বন্ধ করে দেওয়ার পর খুলে দেওয়া হয়েছিল কয়েক দিন পর। আমাদের যে প্রযুক্তি রয়েছে তাতে যে কোনো অ্যাপ বা ওয়েবসাইট কিছুক্ষণের মধ্যেই বন্ধ করে দিতে পারি।
“সে সময় টিকটক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিল, তারা আপত্তিকর ভিডিও মনিটর করবে। তবে সে কথা তারা রাখেনি।”
তবে কথা না রাখলেও এবার টিকটক বন্ধ করার পরিকল্পনা নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “প্রতিটা বিষয়ের ভালো ও খারাপ দিক আছে। সমস্যা হচ্ছে ভালো দিকগুলো আমরা নিচ্ছি না। মাথাটা কেটে না ফেলে মাথা ব্যথা কীভাবে ঠিক করা যায় সে প্রক্রিয়ায় যেতে চাই।
“নিয়ম মেনে চলে টিকটকে মজা করে হাসিখুশি থাকলে তো কোনো সমস্যা নেই।”
টিকটক ‘বাজেভাবে’ ব্যবহার হচ্ছে জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “যেভাবে ভিডিওগুলো দেওয়া হচ্ছে দেখে লজ্জা লাগে, উঠতি বয়সীরা আপত্তিকর ভিডিও দিচ্ছে। মারধরের ঘটনায় ইয়াছিন আরাফাত অপু নামে একজন গ্রেপ্তার হওয়ার পর অনেকেই টিকটক বন্ধ করার জন্য বলেছে।”
রাজধানীর উত্তরায় সড়ক আটকে ভিডিও তৈরির সময় ওই পথ পেরোতে চাওয়া এক ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ইয়াছিন আরাফাত অপু।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, টিকটকের বাংলাদেশ প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হওয়ার পর সিঙ্গাপুরে অবস্থান করা হেলেনা নামে টিকটকের এক পরিচালকের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি।
“ফোনে তাকে বুঝানো হয়েছে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এক রকম নয়। যে ভিডিও অন্যান্য দেশে স্বাভাবিক আমাদের দেশে তা অস্বাভাবিক। সে কথা শুনে আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশের ভিডিওগুলো রিভিউ করে আপত্তিকর ভিডিও সরিয়ে ফেলবে।”
তবে কবে নাগাদ টিকটক কর্তৃপক্ষ ভিডিও পর্যালোচনা করে সরাবে সে বিষয়ে কোনো সময়সীমা নির্ধারিত হয়নি বলে জানান টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
বুধবার টেলিযোগাযোগমন্ত্রী এক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “টিকটক নিয়ে প্রচুর অভিযোগ পাচ্ছি। অনুগ্রহ করে বাজে ভিডিওগুলোর লিঙ্ক ইনবক্সে দিন। যারা পর্নো লিঙ্ক পাঠিয়েছিলেন সেগুলো বন্ধ হয়েছে। যদি কোনোটা না হয়ে থাকে তবে ইনবক্সে দিন।”
টিকটিক নিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর অনেকগুলো ভিডিও লিংক তার ইনবক্সে পাঠানো হয়েছে বলে জানান মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, “টিকটক কর্তৃপক্ষকে বুধবার ১০টির মতো আপত্তিকর ভিডিও দেওয়ার পর সরিয়ে ফেলেছে। শুধু টিকটক নয় ফেইসবুক ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায়ও অগ্রগতি রয়েছে।
“এসব বিষয়ে স্বাভাবিকভাবে রিপোর্ট করা হয়। অনেক সময় শোনে আবার অনেক সময় শোনে না। তবে গত দুই বছরে তাদের রেসপন্স ভালো, রিপোর্ট করার সাথে সাথেই তারা আমলে নিচ্ছে।”