রোহিঙ্গা সমস্যা অস্থায়ীভাবে সমাধান করলে পরবর্তীতে তার প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে। এজন্য এ সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের সংসদ ভবন এলাকায় তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় যুক্ত হন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৭ সালের মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে উদ্ভূত ঘটনায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি বাংলাদেশের জনগণের সহমর্মিতা ও মানবিকতার দিকটি বিবেচনা করে তাদেরকে বাংলাদেশ সরকার আশ্রয় দিয়েছিল। এই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে স্থায়ী সমাধান খোঁজার জন্য সরকার দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিকসহ বহুপাক্ষিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চাপ ও আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমার তার জায়গায় রয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা অস্থায়ীভাবে সমাধান করলে পরবর্তীতে তার প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে। তাই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বহুপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্যে করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি দেখছেন ৷ অথচ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখলের পর থেকে যতবার বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে তাদের সময় স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র নীতি বলতে আদৌ কিছু ছিল না। যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিজেদের স্বার্থে রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে তাদের মুখে নীতির কথা মানায় না। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে ভিশনারি নীতি মেনে সুদক্ষভাবে ডাইনামিক নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলতে চাই, পৃথিবীর একটি দেশের নাম বলুন যে দেশ বাস্তুচ্যুত মানুষদের আশ্রয় দিয়ে মানবিকতার এমন অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে? প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা নর-নারীকে আশ্রয়, বাসস্থান, আহার দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। সারা বিশ্ব যখন শেখ হাসিনার মানবিকতা এবং মানবদরদী ভূমিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ তখন তো আপনারা একটা ধন্যবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন?
শেখ হাসিনার সরকার শ্রমিক বান্ধব সরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্রমাগত লোকসান ঠেকাতে পাটকল বন্ধ করা এবং শ্রমিকদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে তা বাস্তবসম্মত। পাটকল বন্ধের ফলে বেকার শ্রমিকদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন শ্রমজীবী মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা।
শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম খসরু।