দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ওপর হামলার ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম এবং তার পিতার ওপর নির্মম হামলার ঘটনায় নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা আমার জানা নেই। এই হামলার ঘটনা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রের জন্য অশুভ সঙ্কেত।
“এই ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হল যে, এই সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। আমি দুষ্কৃতিকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।”
( ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম )
গুরুতর আহত ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।বুধবার রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা হয়।
হামলাকারীর হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর আগত ওয়াহিদা এখন ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই হামলার অভিযোগে উপজেলা যুবলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বর্তমান সরকার সন্ত্রাসকে আশ্রয় করেই নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চাচ্ছে। বিরোধী দল ও মতকে দমন করে যাচ্ছে রক্তাক্ত কায়দায়। এখন সরকারি কর্মকর্তারাও এদের হিংস্রতার শিকার হচ্ছে।
“দেশে এখন আইন-কানুনের কোনো বালাই নেই। হত্যা, খুন, জখম, টাকা, পাচার, মানব পাচার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান লোপাট, টেন্ডারবাজী ও জবরদস্তি কায়েমের মতো অনাচার আড়াল করতেই গোটা দেশে দুষ্কৃতিকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে রক্তাক্ত কর্মসূচির ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এরই সর্বশেষ শিকার হলেন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম।”
কক্সবাজারে সিনহা হত্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহাকে হত্যাসহ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে বর্তমান সরকার বিচার বহির্ভূত হত্যা যেভাবে সংঘটিত করছে তাতে দুষ্কৃতিকারীরা উৎসাহ পাচ্ছে। দুষ্কৃতিকারীরা যেই হোক ইতোপূর্বে যদি তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হত, তাহলে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্রমণের শিকার হতেন না।
“দেশে আইনের শাসনের বিলুপ্তি ঘটিয়ে, গণতন্ত্রকে কবরস্থ করে নাৎসী কায়দায় দেশ পরিচালনার জন্যই এখন সন্ত্রাসবাদের দোর্দণ্ড প্রতাপ চলছে। দুর্নীতি ও রক্তাক্ত সন্ত্রাসের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত এই সরকার সারাদেশে অশান্তির বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। যে দেশে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্ত্রাসীদের দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে, সেদেশে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা কত অনিশ্চিত তা ব্যাখ্যা করে বলার কোনো অবকাশ নেই।”