হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জন হয়েছে।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, চার দিন আগের ওই ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে মোট ৯ জন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আব্দুল হান্নান (৫০) মঙ্গলবার মারা যান।
হান্নানকে নিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জন হল। বাকি যে আটজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাদের সবার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। ফলে তাদের অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন পার্থ।
নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে গত শুক্রবার এশার নামাজের সময় ওই বিস্ফোরণের ঘটনার পর মোট ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কেবল মামুন প্রধান নামের একজন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরতে পেরেছেন।
গ্যাস পাইপলাইনের লিকেজ থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদের বদ্ধ পরিবেশে গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা।
বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত নারায়ণগঞ্জের বাইতুস সালাত জামে মসজিদে শনিবার সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার রাতে এশার নামাজের পর মসজিদটিতে আধা ডজন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র একসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু ঘটে।
মৃত্যু হয়েছে যাদের >> চাঁদপুর সদরের করিম মিজির ছেলে মোস্তফা কামাল (৩৪) >> ফতুল্লার নিউখানপুর ব্যাংক কলোনির আনোয়ার হোসেনের ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী রিফাত (১৮) >> চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার শেখদী গ্রামের মৃত মহসিনের ছেলে মাইনুউদ্দিন (১২) >> নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার সেকান্দর মিয়ার ছেলে মো. রাসেল (৩৪) >> লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার পলাশী গ্রামের মেহের আলীর ছেলে নয়ন (২৭) >> নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার আব্দুল খালেকের ছেলে বাহার উদ্দিন (৫৫) >> শরীয়তপুরের নড়িয়ায় কালিয়াপ্রাসাদ গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের (১৮) >> শরীয়তপুরের নড়িয়ায় কালিয়াপ্রাসাদ গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে সাব্বির (২১) >> নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার তল্লার আনোয়ার হোসেনের ছেলে জয়নাল (৫০) >> মুন্সীগঞ্জের লৌহজং হাটবুকদিয়া গ্রামের জইন উদ্দিন বেপারীর ছেলে কুদ্দুস বেপারী (৭০) >> পটুয়াখালী রাঙ্গাবালীর বাহেরচরের বাচ্চু ফরাজীর ছেলে জুলহাস উদ্দিন (৩০) >> জুলহাস উদ্দিনের ছেলে জুয়েল (৭) >> মসজিদের মুয়াজ্জিন কুমিল্লা লাঙ্গলকোটের বদরপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৪৮) >> মুয়াজ্জিন দেলোয়ারের ছেলে জুনায়েদ (১৭) >> মসজিদের ইমাম কুমিল্লার মুরাদনগরের পুটিয়াজুড়ি গ্রামের আব্দুল মালেক (৬০) >> খুলনার খানজাহান আলী থানার মীরের জঙ্গা গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে কাঞ্চন হাওলাদার (৫৩) >> পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী কাউখালী গ্রামের বেলায়েত বারীর ছেলে জামাল আবেদিন (৪০) >> পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর সেনের হাওলার সাজাহান পেদার ছেলে নিজাম (৪০) >> নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মজিদের ছেলে নাদিম (৪৫), >> নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকার কফিল উদ্দিন শেখের ছেলে হুমায়ুন কবির (৭০) >> পটুয়াখালী সদরের দড়িতালুক গ্রামের আব্দুল হক বিশ্বাসের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম বিশ্বাস (৪৩) >> পটুয়াখালীর গলাচিপা খালেক হাওলাদারের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদ (৩০) >> মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ চাঁদপুরের মতলব থানার সুজাপুর গ্রামের শামীম হাসান (৪৫) >> নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা মকবুলের ছেলে মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫) >> আবুল বাশার মোল্লা (৫১) >> বরিশালের বাকেরগঞ্জের বারঘড়িয়া গ্রামের সোবাহান ফরাজীর ছেলে মনির ফরাজী (৩০)। >> শরীয়তপুরের নড়িয়ার আলাল শেখের ছেলে ইমরান (৩০) >> নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা আফজালের ছেলে হান্নান (৫০) |
আইসিইউতে চিকিৎসাধীন যারা
ময়মনসিংহের ত্রিশালের আব্দুর রহমানের ছেলে ফরিদ (৫৫), পটুয়াখালীর মোহাম্মদ রাজ্জাকের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫০), কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার চর আলগী গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে শেখ ফরিদ (২১), পটুয়াখালীর চুন্নু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ কেনান (২৪), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার নিউখানপুর ব্যাংক কলোনির আনোয়ার হোসেনের ছেলে রিফাত (১৮), শরীয়তপুরের নড়িয়া কেদারপুর গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ (৪০), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লার আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুস সাত্তার (৪০) এবং নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসিরহাট গ্রামের আবদুল আহাদের ছেলে আমজাদ (৩৭)।
আহতরা সবাই বিভিন্ন জেলার হলেও তারা শিল্প নগরী নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। এদের প্রায় সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ।