প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলেই ১৭ মার্চ উদ্বোধন বাণিজ্যমেলা

1610456373.sangbad_bangla_1607864011

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সামনে রেখে আগামী ১৭ মার্চ ২৬তম ঢাকায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২১ উদ্বোধনের জন্য একটি প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলেই ১৭ মার্চ পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রে উদ্বোধন হবে এক মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

ইপিবি সূত্র জানায়, প্রতিবছর ইংরেজি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি থেকে মেলা শুরু হয়। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ আসায় এবারের মেলা মার্চে শুরুর প্রস্তাব এসেছে। সবকিছু বিবেচনা করে আগামী মার্চে পূর্বাচলে স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনলাইনে এবং শারীরিক উপস্থিতি- উভয় পদ্ধতিতে আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) ইপিবি এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনার জন্য এবার আমরা জানুয়ারিতে মেলা আয়োজন করতে পারছি না। তবে আনন্দের কথা হলো বাণিজ্যমেলার নিজস্ব কমপ্লেক্স বা বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজন করতে পারবো। আমাদের মেলা স্টিয়ারিং কমিটির সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ মার্চ মেলা উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়ে একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আমরা সে লক্ষ্য সামনে নিয়ে মেলার কাজ করে যাচ্ছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। তিনি সিদ্ধান্ত দিলে ১৭ মার্চ ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা উদ্বোধন করা হবে।

এছাড়া এবছর করোনার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাণিজ্যমেলা সীমিত পরিসরে অনলাইন ও শারীরিক উপস্থিতি- উভয় পদ্ধতিতেই আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসিয়ালি হস্তান্তর এখনো হয়নি, তবে আনঅফিসিয়ালি হস্তান্তর হয়ে গেছে। আমাদের সবকিছু রেডি। কীভাবে হস্তান্তর করবে সে বিষয়ে চায়না দূতাবাস একটি প্রস্তাব দিয়েছে। সেটা বিবেচনা করছি।

এখন বাণিজ্যমন্ত্রী যেদিন সময় দেবেন সেদিন আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর করা হবে। আশা করছি শিগগিরই হস্তান্তর হয়ে যাবে।

ইপিবি সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পরিবর্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণখালীর বাগরাইয়াটে (পূর্বাচলে) ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’-এ মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে।

পূর্বাচলে স্থায়ীভাবে বাণিজ্যমেলা করার জন্য সরকারের কাছে ৩৮ একর জমি চেয়েছিল ইপিবি। তারমধ্যে মাত্র ২৬ একর জমি দেওয়া হয়েছে। আরো ১২ একর জমি শিগগিরই দেওয়া হবে। ২০ জমির উপর এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণকাজ শেষ। আর ৬ একর জমিতে ওয়্যারহাউজ, পাওয়ার প্ল্যান্ট, স্থায়ী ফুড সেন্টার ও অংশগ্রহণকারীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থাসহ প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

জানা যায়, চীনের অনুদানে ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ এবং সরকারি তহবিলের ১৭০ কোটি ৩১ লাখ টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়। পরে বাস্তবতার নিরিখে অতিরিক্ত ১৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ, নতুন স্থাপনা নির্মাণ, সেন্টারের পরিসর বৃদ্ধি, রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কারণে ১৭০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ৩০৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

চীনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার বুঝে পাওয়ার কথা ছিল। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরও চায়না প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবনা অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকতার জন্য এখনও সেটি বুঝে পায়নি সরকার। তবে ২০০৯ সালে নেওয়া এ উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সময় গিয়ে দাঁড়ায় ১২ বছরে।

গত ২৫ বছরে ধরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অস্থায়ী জায়গায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর জানুয়ারির ১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী এ মেলা উদ্বোধন করেন। কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাসের জন্য মেলা দুই মাস পিছিয়ে মার্চে উদ্বোধন করা হতে পারে বলে জানা যায়।

Pin It