নিউইয়র্কে বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জের উদ্বোধন করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জ’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসাবে স্থানীয় সময় সোমবার লাউঞ্জটি স্থাপন করা হয়।

নিউইয়র্কে বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জের উদ্বোধন করলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীলাউঞ্জটি উদ্বোধনকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ লাউঞ্জটিতে বিভিন্ন বই, ছবি, প্রামাণ্য চিত্র ও গ্রাফিক্যাল ডিসপ্লের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। বহপাক্ষিকতাবাদ, বিশেষ করে জাতিসংঘের প্রতি জাতির পিতার যে গভীর আস্থা ও বিশ্বাস ছিল, বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জের এই সংগ্রহ যেন তা-ই ফুটিয়ে তুলেছে।’ তিনি লাউঞ্জটিতে জাতির পিতার উপর আরও বই ও প্রদর্শনী সামগ্রী প্রদান করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, গত বছর লাউঞ্জটির স্থাপনের কাজ শেষ হলেও কোভিড-১৯ জনিত কারণে উদ্বোধন সম্ভব হয়নি। লাউঞ্জটি মিশনে আসা সুধিজনদের বিশ্ব শান্তির প্রতি জাতির পিতার স্বপ্ন ও আদর্শের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে।

মিশনে আসা জাতিসংঘ ও সদস্য রাষ্ট্রসমূহের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিবর্গের বৈঠকের জন্য লাউঞ্জটি ব্যবহৃত হবে। এরফলে তারা জাতির পিতা জীবন আদর্শ সম্পর্কে ধারণা লাভের সুযোগ পাবেন।

জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। সেই থেকে বাংলাদেশ বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বর্তমানে ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ, ইউএনওপিএস-এর নির্বাহী বোর্ডের সহ-সভাপতি, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এজেন্ডাসমূহ শ্রেণিবিন্যাসের ক্ষেত্রে গঠিত আন্তঃরাষ্ট্রীয় কনসালটেশনের ফ্যাসিলেটেটর এবং প ম জাতিসংঘ এলডিসি কনফারেন্সের প্রস্তুতি কমিটির সহ-সভাপতি বাংলাদেশ।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে সোমবার বিকেলে জাতিসংঘের অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে-এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

আলোচনাকালে তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পরিবহণে বাংলাদেশ বিমানকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সহায়তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য জনাব খারেকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল খারে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মাঠ পর্যায়ে জাতিসংঘের পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত কৌশল বাস্তবায়নে নেতৃত্বের জন্য বাংলাদেশের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ শান্তিরক্ষী মোতায়েনে বাংলাদেশের যে সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি রয়েছে তার প্রশংসা করেন জেনারেল খারে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নারী শান্তিরক্ষীদের দ্বারা কৌশলগত যোগাযোগ এগিয়ে নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে প্রস্তাব দেন এসময় স্বাগত জানান জেনারেল খারে।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগদান উপলক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরকারি সফরে গতকাল থেকে নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তিনি এলডিসি বিষয়ক একটি যৌথ থিমেটিক সভায় অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিব, সাধারণ পরিষদের সভাপতিসহ জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রের আয়োজনে অনুষ্ঠেয় ‘মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি: সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের অবস্থা’ ও ‘স্বল্পোন্নত দেশসমূহের টেকসই উত্তরণ এবং পুনরায় ফিরে আসা রোধে সক্ষমতা বিনির্মাণ’ শীর্ষক দুটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

Pin It