টাঙ্গাইলের বিচারককে চিঠি দিয়ে হত্যার হুমকি

image-172024-1630071424bdjournal

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিনকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হলে তার ঘনিষ্ট স্বজন আউট সোর্সিং হিসেবে প্রসেস সার্ভার পদে চাকরিরত এক ছেলেকে গলাকেটে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়।

শুক্রবার দুপুরে বিচারক খালেদা ইয়াসমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে জেলার বিচারকদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিচারক খালেদা ইয়াসমিনসহ তার পরিবারের লোকজন।

আদালত সূত্রে জানায়, বৃহস্পতিবার একটি খাকি খামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিনের কাছে একটি চিঠি আসে। সেখানে প্রেরকের স্থানে জুবায়ের রহমান লেখা রয়েছে। চিঠিতে লেখা রয়েছে, ইতি- ‘জঙ্গি সংগঠন’।

বিচারক খালেদা ইয়াসমিন জানান, চিঠিটি পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এছাড়া তিনি ও তার পরিবারের লোকজন বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানান।

চিঠির ভাষ্য, ‘ম্যাডাম- আপনাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি দিলাম। বিস্তারিত পড়ে দেখুন। আমরা জঙ্গি সংগঠনের লোক। তাই জীবনে চলার পথে অনেক অন্যায় কাজ করেছি। এমনকি এখনও করি। আমরা যখন যাকে ট্রার্গেট করি তখন তাকে ছলে বলে কৌশলে হত্যা কারি। এটাই আমাদের পেশা। এবার আপনাকে হত্যা করার পালা। কারণ আপনি নারী ও শিশু কোর্টে আসার পর থেকে এ পর্যন্ত অনেকটি বড় ধরনের মামলার রায় দিয়েছেন। তাতে আমাদের লোকজনের খুব বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। তাই আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলছি যদি নিজের জীবনের প্রতি মায়া থাকে তাহলে টাঙ্গাইল থেকে বদলি হয়ে চলে যান। যদি কথা না শুনেন তাহলে আমরা আপনাকে হত্যা করতে বাধ্য হবো। আর আমাদেরকে যারা সহযোগীতা করতেছে তারা কয়েকজন আইনজীবী এমনকি জজ কোর্ট ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এর স্টাফদের সমন্বয়ে।’

চিঠিতে আরও লেখা হয়, ‘যদি আপনাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হই তাহলে আমাদের হিংস্রতার টার্গেট রয়েছে আরেকটি। সেটা হলো- আপনার নারী ও শিশু কোর্টে আউট সোর্সিং হিসেবে প্রসেস সার্ভার পদে যে ছেলেটি চাকরি করে সে নাকি আপনার খুব ঘনিষ্ট আত্মীয়। তাই আমাদের লক্ষ্য ছেলেটাকে অফিসে আসা যাওয়ার পথে বা কোর্ট থেকে বাহিরে যাওয়া মাত্রই আমরা অপহরণ করবো। পরে গহীন জায়গায় নিয়ে আটকিয়ে রেখে কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করবো। আর যদি টাকা না দিতে পারেন তাহলে ছেলেটাকে জবাই করে হত্যা করা হবে। পরে লাশ যমুনা নদীতে ফেলে দেয়া হবে। কথাটা মনে রাখবেন।’

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, চিঠির বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন। এটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসাথে বিচারক খালেদা ইয়াসমিন ও তার পরিবারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইল র‍্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, র‍্যাবের সকল টিম বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার জয়পুরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের জেলা ও দায়রা জজ মো. রুস্তম আলীকে ডাকের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে। ‘তালেবান গোষ্ঠী’ সংগঠন পরিচয়ে এই চিঠি দেয়া হয়। এ ঘটনায় জজ রুস্তম আলী থানায় জিডি করেছেন।

Pin It