দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে আরও ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত ১৬ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম।
এর আগে সর্বশেষ ২৭ মে এর চেয়ে কম মৃত্যুর খবর এসেছিল। সেদিন ২২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তারপর থেকে দৈনিক মৃত্যু ক্রমেই বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে দৈনিক মৃত্যু দুইশর ঘর ছাড়িয়ে যায়। গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণের হার কমার সঙ্গে সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও কমছে।
গত এক দিনে মারা যাওয়া ২৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে হল ২৭ হাজার ২৫১ জন।
সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ২৭ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে দেশে আরও ১ হাজার ৫৫৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ২৩৮ জনে।
গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ হয়েছে, যা আগের দিন ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ ছিল।
শুধু ঢাকা বিভাগেই ১ হাজার ১০৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের ৭১ শতাংশ।
যে ১৬ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ১৫ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তাদের মধ্যে ১৫ জনই ছিলেন নারী, আর পুরুষ মারা গেছেন ১১ জন। আগে দেশে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় নিয়মিতভাবে পুরুষের সংখ্যা বেশি থাকলে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপ শুরুর পর অগাস্ট থেকে নারীদের মৃত্যুহার বেড়েছে।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ১ হাজার ৫৬৫ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৩ হাজার ১০৬ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের কোভিড পরিস্থিতির সাপ্তাহিক যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে গত এক সপ্তাহে (১৩ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর) দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় (৬ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর) ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে; মৃত্যু কমেছে ২০ দশমিক ১১ শতাংশ।
গত সপ্তাহে মোট ১২ হাজার ২৭০ জনের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, মৃত্যু হয়েছিল ২৯৪ জনের। তার আগের সপ্তাহে ১৫ হাজার ৯৫৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, মারা গিয়েছিরেন ৩৬৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২৭ হাজার ৪৩১টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯৪ লাখ ৬৫ হাজার ৮৭টি নমুনা।
এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৫ এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ৫ জন বাদে খুলনা বিভাগের ২ জন এবং বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বাসিন্দা ছিলেন ১ জন করে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের মধ্যে ২৩ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৩ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। গত ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ অগাস্ট তা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৬ লাখ ৯২ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২২ কোটি ৮৫ লাখের বেশি রোগী।