গাজার রাফাহ’তে “পরাক্রমশালী” অভিযান চালাতে ইসরায়েলের গোঁয়ার্তুমিতে আন্তর্জাতিক নিন্দা বেড়েই চলেছে। বিশ্ব নেতারা ইতোমধ্যেই সেখানে আটকা পড়া ১৫ লাখ ফিলিস্তিনির বিপর্যয়কর পরিণতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারন করেছেন। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড বৃহস্পতিবার এক বিরল যৌথ বিবৃতিতে তাদের সাম্প্রতিকতম জরুরি আবেদনে আবারো ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে ‘এই পথে না এগুতে’ ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়েছে। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, “বেসামরিক লোকজনের আর তো যাওয়ার কোনো জায়গাই নেই, তাই এমন একটি সামরিক অভিযানের পরিণতি হবে বিধ্বংসী। খবর এএফপি’র।
ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন সামরিক অভিযানের ফলে লক্ষ লক্ষ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মিশর সীমান্তের কাছে গাজার দক্ষিণতম নগরীর ক্রমেই বিস্তৃত হওয়া এক অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। আগ্রাসন থেকে বিরত থাকার জন্য বিদেশি সরকার ও সাহায্য সংস্থাগুলির চাপ সত্ত্বেও, ইসরায়েল রাফাহ’তে অনুপ্রবেশ ও হামাস ব্যাটালিয়নগুলোকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, পুরোপুরি বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন। রাফাহ থেকে তারা বেসামরিক লোকজনকে যুদ্ধাঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে দেবেন। চার মাসব্যাপী এই যুদ্ধে একটি বিরতি টানার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের জোর তৎপরতার মাঝেই ইসরাইলের আসন্ন হামলার এই হুমকি আসে। গাজার বিস্তীর্ণ অংশ এখন সমতলে রূপান্তরিত, অঞ্চলটির বেশিরভাগ লোকজন বাস্তুচ্যুত, আর লাখো মানুষ অনাহারের দ্বারপ্রান্তে।
গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের বিশেষ উপদেষ্টা অ্যালিস ওয়াইরিমু এনদেরিতু বুধবার বলেন, রাফাহ’তে ইসরায়েলি হামলা চলতে থাকলে নৃশংসতার ঝুঁকি হবে গুরুতর ও উচ্চমাত্রার।
এদিকে,ইসরায়েলের হাতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ে গাজায় ১৩০ জন জিম্মিকে মুক্তি দান ও যুদ্ধ স্থগিত করার লক্ষ্যে কায়রোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা একটি চুক্তির মধ্যস্থতা করতে চাইছে। মিডিয়া রিপোর্টের পর, নেতানিয়াহু’র কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইসরায়েল কায়রোতে আমাদের জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে হামাসের কোনো নতুন প্রস্তাব পায়নি।” তিনি ফিলিস্তিনির প্রতিনিধি দলকে বলেন, হামাস তার অবস্থান নমনীয় না করা পর্যন্ত ইসরায়েল আলোচনায় পুনরায় যোগ দেবে না। নেতানিয়াহু ওই প্রতিবেদনে সরাসরি মন্তব্য না করে, এই মর্মে তিনি জোর দেন যে, হামাস তাদের বিভ্রান্তিকর দাবিগুলি প্রত্যাখ্যান ও ত্যাগ করলে তারা আলোচনায় এগিয়ে যেতে পারবে।
মঙ্গলবার, সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস ইসরায়েলের মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ডেভিড বার্নিয়ার সাথে আলোচনায় যোগ দেন। এদিকে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল বুধবার কায়রোতে ছিল। ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরের শাসক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, হামাসকে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার ও ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও ট্র্যাজেডি বন্ধ করার আহ্বান জানান। মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে যে সংস্থাটির পরিচালক, ক্রিস্টোফার ওয়ে দেশের আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার সাথে দেখা করার জন্য ইসরায়েলে অঘোষিত সফর করেছেন। ব্যুরো’র এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়ে তেল আবিব ভিত্তিক এফবিআই এজেন্টদের সাথেও দেখা করেছেন।