একটুর জন্য পারল না বাংলাদেশ

Mushfiq

ব্যাটিংয়ে রান হতে পারত আরেকটু বেশি। বোলিং হতে পারত আরেকটু ভালো। ফিল্ডিংয়ের ঘাটতি হতে পারত আরেকটু কম। একটু একটু করে জমে ওঠা হতাশাগুলো ম্যাচ শেষে রূপ নিল দীর্ঘশ্বাসে। উত্তেজনা ছড়াল, রোমাঞ্চের দোলা লাগল, জাগল সম্ভাবনা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে উঠল না বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয়ী বাংলাদেশ হেরে গেছে দ্বিতীয় ম্যাচে। ২ উইকেটের জয়ে নিউ জিল্যান্ড পেয়েছে টানা দ্বিতীয় জয়।

ওভালে মঙ্গলবার বাংলাদেশ গুটিয়ে গিয়েছিল ২৪৪ রানে। মাঝারি সেই রানেও ম্যাচ জমল তুমুল। শেষ দিকে ম্যাচের লাগাম হাতবদল হলো কয়েকবার। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি কিউইদেরই।

ঘাসের ছোঁয়া থাকা নতুন উইকেটে দুই অধিনায়কেরই চাওয়া ছিল আগে বোলিং। সেই চাওয়া পূরণ হয় কেন উইলিয়ামসনের। তবে শুরুতে দ্রুত উইকেটের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

সবুজাভ উইকেটেও মুভমেন্ট খুব একটা ছিল না। তবে কিউই পেসারদের বোলিং ছিল ভালো। আঁটসাঁট লাইন-লেংথের পাশাপাশি তারা আচমকা মিশিয়ে দিয়েছেন কার্যকর শর্ট বল।

সে সব সামলেই এগিয়েছেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। সাবধানী শুরুর পর দারুণ কিছু শটে ৮ ওভারে দুজন তোলেন ৪৪ রান।

কিন্তু দুজনই উইকেট বিলিয়ে আসেন নিজেদের ভুলে। ২৫ বলে ২৫ করে সৌম্য বোল্ড ম্যাট হেনরির সোজা বল ক্রস ব্যাটে খেলে। থিতু হয়ে গেলেও তামিম ২৪ রানে বিদায় নেন লকি ফার্গুসনের ১৪৪ কিলোমিটার গতির বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে।

তখনও ঠিক চাপে পড়েনি বাংলাদেশ। সাকিব ও মুশফিক দলকে টেনেছেন স্বচ্ছন্দেই। আগের ম্যাচে ১৪২ রানের জুটি গড়া এই দুজনের জুটি আবারও আশা দেখাচ্ছিল দলকে। কিন্তু এবার আশাভঙ্গ রান আউটে। দ্রুত রানের চেষ্টায় ছুটতে গিয়ে ড্রেসিং রুমে ছুটতে হলো মুশফিককে।

এরপর কেবল কেবল সম্ভাবনা আর আক্ষেপের তালিকাই দীর্ঘ হয়েছে। অনায়াসে এগোতে থাকা সাকিব মূহুর্তের অমনযোগিতায় আউট হয়েছেন ৬৮ বলে ৬৪ করে। দুর্দান্ত খেলতে থাকা মোহাম্মদ মিঠুন ২৬ রানে ফিরেছেন ভুল শট নির্বাচনে।

৩০ ওভার শেষে দলের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৫১। ২৮০ বা ৩০০ রানের হাতছানি ছিল তখনও। কিন্তু পরের ১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে আসে কেবল ৩৭ রান। ছন্দ, গতি, সবই হারায় এই সময়ে।

মাহমুদউল্লাহ ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। শেষ দিকের জন্য দলের সেরা ব্যাটসম্যান হলেও এই ম্যাচে পারেননি বড় শট খেলতে, ধুঁকেছেন সিঙ্গেল নিতেও। থেমেছেন ৪১ বলে ২০ করে। মোসাদ্দেক হোসেনও পারেননি শেষের দাবি মেটাতে।

আটে নেমে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের ২৩ বলে ২৯ রানের ইনিংস দলকে নিয়ে গেছে আড়াইশর কাছে।

ইনিংসের একমাত্র ছক্কা এসেছে সাইফের ব্যাট থেকে; ৯৭ মিটার লম্বা ছক্কায় মিচেল স্যান্টনারকে ফেলেছেন গ্যালারিতে।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসী শট খেলার তাড়নায় চারটি উইকেট পেয়েছেন ম্যাট হেনরি। তবে শেষ বলের ওই ছক্কার আগ পর্যন্ত স্যান্টনার বোলিং করেছেন দারুণ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৪৯.২ ওভারে ২৪৪ (তামিম ২৪, সৌম্য ২৫, সাকিব ৬৪, মুশফিক ১৯, মিঠুন ২৬, মাহমুদউল্লাহ ২০, মোসাদ্দেক ১১, সাইফ ২৯, মিরাজ ৮, মাশরাফি ১, মুস্তাফিজ ০*; হেনরি ৯.২-০-৪৮-৪, বোল্ট ১০-০-৪৪-২, ফার্গুসন ১০-০-৪০-১, ডি গ্র্যান্ডহোম , নিশাম ২-০-২৪-০, স্যান্টনার ১০-১-৪১-১)

নিউ জিল্যান্ড ৪৭.১ ওভারে ২৪৮/৮ (গাপটিল ২৫, মানরো ২৪, উইলিয়ামসন ৪০, টেইলর ৮২, ল্যাথাম ০, নিশাম ২৫, ডি গ্র্যান্ডহোম ১৫, স্যান্টনার ১৭*, হেনরি ৬, ফার্গুসন ৪*; মাশরাফি ৫-০-৩২-০, মুস্তাফিজ ৭.১-০-৪৮-০, মিরাজ ১০-০-৪৭-২, সাইফ ৭-০-৪১-২, সাকিব ১০-০-৪৭-২, মোসাদ্দেক ৮-০-৩৩-২)

ফল: নিউ জিল্যান্ড ২ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রস টেইলর

Pin It