এমন অভিজ্ঞতা আগে হয়নি নির্বাচকদের

selectors-200820-01

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিনের মতে পরিস্থিতি খুবই কঠিন। আরেক নির্বাচক হাবিবুল বাশারের কাছে মজা লাগছে, আবার চ্যালেঞ্জও দেখছেন। শ্রীলঙ্কা সফরের দল গড়তে গিয়ে যে বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা, তেমন অভিজ্ঞতা হয়নি আগে কখনও।

শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষণা করা হতে পারে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ততদিনে প্রায় ৬ মাস সব ধরনের খেলার বাইরে থাকা হয়ে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। লম্বা সময় খেলার বাইরে। নেই দলগত অনুশীলন ও স্কিল ট্রেনিংও। এই অসহায়ত্বের মধ্যেই শ্রীলঙ্কা সফরের দল বাছাই করতে হবে নির্বাচকদের।

জাতীয় দলের পাশাপাশি হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) দলও যাবে শ্রীলঙ্কা সফরে। দল গড়া নিয়ে কয়েক দিন থেকেই কাজ করে চলেছেন নির্বাচকরা।প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল জানালেন, ভালো-মন্দ দুটি দিকই তিনি দেখতে পাচ্ছেন।

“সবার জন্যই পরিস্থিতি কঠিন। আমাদের জন্য কঠিন, কারণ খেলা নেই, দল গড়ার সময় বিবেচনায় রাখব কোন দিকগুলো। তেমনি কোচ, টিম ম্যানেজমেন্ট, এমনকি ক্রিকেটার, সবার জন্যই কিন্তু পরিস্থিতি কঠিন। খেলা থাকলে অনেকেই নিজেদের পারফরম্যান্স দেখাতে পারত, আমরাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই দেখতে পারতাম। সেই সুযোগ কারও নেই।”

“তবে একটা ভালো দিক হলো, টানা খেলায় যে ক্লান্তি অনেকের ছিল, এখন সেটা থাকবে না। সবাই তরতাজা হয়ে ফিরবে। খেলার তাড়না ও ভালো করার ক্ষুধাও আশা করি বেড়ে যাবে।”

হাবিবুল বাশার তুলে ধরলেন কেবল দল নির্বাচনের চ্যালেঞ্জটুকুর কথাই। একদিক থেকে তার কাছে যেমন মনে হচ্ছে চ্যালেঞ্জ একটু কম, আরেকদিক থেকে আবার অনেক বেশি।

“আমার কাছে খুব মজার লাগছে। তবে পরিস্থিতি ইন্টারেস্টিং হলেও কাজটি সহজ নয়। এমনিতে সবসময় দল গড়ার সময় আমরা জানি যে কে কেমন ফর্মে আছে, কার কী অবস্থা। সবকিছু নিয়েই ধারণা থাকে। এবার সেরকম ব্যাপার নেই। কেউ কাউকে জায়গার জন্য পুশ করছে না। কাজেই চ্যালেঞ্জ কম।”

“আবার একটু গভীরভাবে যদি দেখেন, পারফরম্যান্স থাকলে কাজটা সহজ। সবাই জানে কে কেমন করছে। এখন যেটা হবে, পুরোপুরি আমাদের নিজেদের বোধ, ভাবনা, বিবেচনা থেকেই দল গড়তে হবে। এখানে চ্যালেঞ্জ অনেক অনেক বেশি।”

নানামুখি বাস্তবতার মধ্যে দল কীভাবে গড়া হবে, সেটির একটি ধারণা দিলেন প্রধান নির্বাচক।

“মূলত অভিজ্ঞতায় জোর দেব আমরা, সেটি ছাড়া তো বিকল্প আছে সামান্যই। আর শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার পর ট্রেনিং সেশনগুলো গুরুত্বপূর্ণ হবে। আমরা তো এখান থেকে ২০-২২ জনের প্রাথমিক দল পাঠাব। এরপর ট্রেনিংয়ে চোখ রাখতে হবে। কারণ সবার জন্যই লম্বা বিরতি গেছে। এই বিরতির পর কে কত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো মানসিকতায় ফিরতে পারে, এসব দেখা হবে।”

“ট্রেনিংয়ের পারফরম্যান্স দেখেই টেস্টের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করা হবে। সেটি ১৫ বা ১৭ জনের হবে হয়তো। জাতীয় দলের সঙ্গে ২৪ জনের এইচপি দলও যাবে। কাজেই দুটির সমন্বয় করে দল গড়তে হবে। দল নিয়ে অনেক ঘষামাজা এখনও বাকি।”
প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে হাবিবুলও বললেন, নতুন কাউকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। অভিজ্ঞদের ওপরই ভরসা রাখবেন তারা। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরলে তার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। কন্ডিশন মাথায় রেখে দলের কৌশল ঠিক করে সে অনুযায়ীই দল গড়া হবে বলে জানালেন হাবিবুল।

তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩৮ ক্রিকেটারের একটি পুল করা আছে নির্বাচকদের। সেখান থেকেই মূলত বাছাই করা হবে স্কোয়াড। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যথেষ্ট বিকল্প প্রস্তুত রাখতে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হবে সবার।

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান আগেই জানিয়েছেন, তিন দফা পরীক্ষা করিয়ে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হবে ক্রিকেটারদের। প্রথমবার পরীক্ষার জন্য জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সবার বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এইচপির প্রধান ও বিসিবি পরিচালক নাঈমুর রহমান বৃহস্পতিবার জানালেন, এইচপির ক্রিকেটারদের যাদের ঢাকায় বাসা আছে, তাদেরও বাসায় গিয়েই নমুনা সংগ্রহ করা হবে। বাকিদের করা হবে মিরপুর একাডেমিতে। জাতীয় দলের মতোই একই মানের ব্যবস্থাপনায় ও সতর্কতায় দেশে ও শ্রীলঙ্কায় ক্যাম্প হবে এইচপির ক্রিকেটারদেরও।

সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এক সঙ্গেই শ্রীলঙ্কায় যাবে জাতীয় দল ও এইচপি দল।

Pin It