করোনাভাইরাসের দিনগুলোতে সাইকেল

jobike-dhaka-240620-02

স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ থেকেও রক্ষা করতে পারে সাইকেল।

করোনাভাইরাসের প্রকোপের মাঝে শিথিল লকডাউনের কারণে মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনে ঘরে বাইরে যেতে হচ্ছে, ব্যবহার করতে হচ্ছে গণপরিবহন। আবার যাদের নিজস্ব বাহন আছে তাদের ঝুঁকি কিছুটা কম হলেও সঙ্গে আছে জ্বালানি খরচের চাপ।

এই অবস্থায় সাইকেল হয়ে উঠছে সোনায় সোহাগা। বাহনটা নিজস্ব, নেই জ্বালানি খরচ, পরিবেশেরও কোনো ক্ষতি করে না, আবার তা ব্যবহারের মাধ্যমে শরীরচর্চাও হচ্ছে। সাইকেলের ব্যবহারকে উৎসাহ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সাইকেল ব্যবহারের এই পরামর্শ অনুসরণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বোগোটা শহরে ১০০ কিলোমিটার রাস্তায় তৈরি করা হয়েছে সাইকেলের লেইন। বার্লিন, মেক্সিকো, বুদাপেস্ট, ভ্যানকুভার, মিলানেও এই পদ্ধতি বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।

আমাদের দেশে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলেও সাধারণ মানুষ নিজে উদ্যোগেই সাইকেল বেছে নিচ্ছেন, এমনকি নিজস্ব মোটরযান থাকলেও।

করোনাভাইরাস আরও লম্বা সময় আমাদের মাঝে থাকবে। আর যতদিন এর কোনো টিকা আবিষ্কার না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আমাদের সবার থেকে দূরে দূরেই থাকতে হবে।

এরই মাঝে চালু হয়েছে বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কর্মীদের ডাকা হচ্ছে অফিসে। তার প্রেক্ষিতে গণপরিবহনে ভীড় বাড়ছে, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করার আদেশ অমান্য হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে।

এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব আকার ধারণ করছে, বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি। তাই দৈনন্দিন চলাচলে জন্য নিজেদের সাধ্যমত সাইকেল কিনে ফেলতে পারলে গণপরিবহনের ঝুঁকি এড়ানো যাবে অনায়াসে।

আর বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে সাইকেল ব্যবহার জনপ্রিয় হলে যানজট কমবে। যাতায়াতের খরচ কমে যাবে অনেকাংশে। আর এই মহামারীর সময়ে খরচ যত কমানো সম্ভব হবে ততই ভবিষ্যতের জন্য ভালো।

ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে ঘরবন্দি থেকে শারীরিক পরিশ্রম কমেছে সবারই। পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস হয়ে উঠছে অস্বাস্থ্যকর। এমন পরিস্থিতিতে সাইকেলকে দৈনিক যাতায়াত মাধ্যম হিসেবে বেছে নিলে প্রতিদিন আপনার শরীরচর্চা হবে অফিস যাতায়াতের পথেই।

আর চাইলেও ছুটির দিন বাদে এই শরীরচর্চা আপনি বাদ দিতে পারবেন না কারণ অফিস তো যেতেই হবে। এতে শরীরে চর্বি জমা আশঙ্কা কমবে, আলসেমি কাটবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও জোরদার হবে।

পরিবারের প্রবীণরাও বেছে নিতে পারেন সাইকেল। চিকিৎসকের কাছ থেকে অনুমতি পেলে পার্কে হাঁটা বাদ দিয়ে সাইকেল চালানোকে বেছে নিলে সংক্রমণের ঝুঁকি যেমন কমবে, সঙ্গে শরীরচর্চাও হবে।

করোনাভাইরাসের একমাত্র ভালো দিক হল পরিবেশের পরিশোধন। করোনাভাইরাসকে পরাজিত করতে পারলেও পরিবেশ ভালো রাখতে আমরা সবাই নিশ্চয়ই চাই। আর সেই লক্ষ্য অর্জন করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে সাইকেল।

Pin It