বৈধ পথে রেমিটেন্স আরও বাড়ানোই প্রধানমন্ত্রীর ২ শতাংশ প্রণোদনার লক্ষ্য: অর্থমন্ত্রী

image-100265-1572026977

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন,‌ ‘বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রবাহ আরও বাড়ানোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই শতাংশ প্রণোদনার মূল লক্ষ্য।’

বৃহস্পতিবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ২০টিরও বেশি রেমিটেন্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

অর্থমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বৈধ পথে প্রবাসীরা যত খুশি রেমিটেন্স পাঠাতে পারেন। এই রেমিটেন্সের পরিমাণ প্রতি ট্রানজেকশনে ১৫০০ ডলারের বেশি না হলে যুক্তরাজ্যে বা বাংলাদেশে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলবে না। বরং প্রেরিত রেমিটেন্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা রেমিটেন্স প্রেরণকারীকে দেওয়া হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে সরকার ৩০৬০ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, রেমিটেন্সের ওপর এ প্রণোদনা জুলাই ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়েছে। কাজেই যারা ওই সময় থেকে বাংলাদেশে বৈধ পথে টাকা পাঠিয়েছেন, তারা রেমিটেন্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য প্রণোদনা গ্রহণের ব্যবস্থা নিতে পারেন। তিনি বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনা একটি নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। বিশ্বের আর কোনো দেশের প্রবাসীরা এ সুবিধা পাচ্ছেন না।

মন্ত্রী জানান, রেমিটেন্স প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধাগুলি সার্বক্ষণিক নজরদারীর জন্য যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনারের নেতৃত্বে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বিভিন্ন বন্ডের কথা উল্লেখ করে প্রবাসীদের এই সব বন্ডে বিনিয়োগে পরামর্শ দেন। মন্ত্রী জানান, আগামী মাসে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বাংলা টাকা বন্ড চালু করা হচ্ছে। যা প্রবাসীদের বিনিয়োগের একটি বড় ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রায় ১৩০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এরমধ্যে ৪০টি অঞ্চলের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি লাভবান হতে পারেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম ঘোষণা করেন যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে সর্বাধিক রেমিটেন্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সন্মাননা দেওয়া হবে।তিনি বলেন, ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন এই সন্মাননা প্রদান করবে।

হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে। এ জন্য তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বৈধ পথে রেমিটেন্স আরো বাড়ানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাস আয়ের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আশা করেন, প্রণোদনা দেওয়ার ফলে রেমিটেন্সের পরিমাণ আগামী বছর রেকর্ড পরিমাণে বাড়বে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে রেমিটেন্স হাউজের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে প্রবাস-আয়ের ওপর প্রণোদনা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তারা আশা প্রকাশ করেন, এই প্রণোদনার জন্য বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রেরণের পরিমাণ বাড়বে। তারা এক্ষেত্রে সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে প্রচার-প্ররোচনা জোরদার করার পরামর্শ দেন।

Pin It