দাদার মামলা নাতি চালায়, এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে

1608466885.Asian_Mail_24_06-2-1024x585

আধুনিক বিশ্বে প্রায় ৯০ শতাংশ মামলা স্বাভাবিক আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হয়। মামলাজট কমাতে বাংলাদেশকে সেদিকেই যেতে হবে।

এজন্যই সরকার বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতি চালু করেছে। বিচারপ্রার্থী জনগণসহ আইনজীবীদের এ পদ্ধতি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে হবে।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জিপি (সরকারি কৌঁসুলি) এবং পিপিদের (পাবলিক প্রসিকিউটর) জন্য অনলাইনে আয়োজিত ২২তম বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

মীমাংসাযোগ্য মামলাগুলো আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলে গেছেন যদি কোনো দেওয়ানি মামলা দাদা শুরু করেন তাহলে তা বাবা চালায়, ছেলে চালায়, নাতি চালায় তাও শেষ হয় না। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আমরা আর এর মধ্যে থাকতে চাই না। এ বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।

দুর্নীতির ক্ষেত্রে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের বিষয়টি সরকারি আইন কর্মকর্তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আদালত অঙ্গনে দুর্নীতি সংক্রান্ত সব প্রচলিত প্রথা পরিহার করে সততা, স্বচ্ছতা, সাহসিকতা ও গাতশীলতার সমন্বয় ঘটিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। নিজ নিজ কর্মস্থলে উন্নত নৈতিকমান ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে আন্তরিকতার সঙ্গে সরকারি মামলা পরিচালনা করতে হবে।

বিচারপ্রার্থী জনগণ যাতে তাদের কাছে সব রকম সহোযোগিতা পায় সে বিষয়েও সজাগ থাকতে বলেন আইনমন্ত্রী।

আইন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, সব ধরনের দুর্নীতি থেকে দূরে থেকে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার প্রতিটি পর্যায়ে সততা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে আইনানুগভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাহলেই জনগণের প্রত্যাশিত স্বল্পসময়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে এবং বিচার বিভাগের প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থা বহুলাংশে বাড়বে।

তিনি বলেন, আপনারা নিজ নিজ জেলার সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই উপলব্ধি করেছি যে, আপনাদের বেতন বা ফি বাড়ানো দরকার। আপনাদের একটি সম্মানজনক ও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার মতো ফি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

মন্ত্রী বলেন, আজ আমাদের এই ভার্চ্যুয়াল সিস্টেম না থাকলে কিন্তু জীবনযাত্রা পথ বন্ধ হয়ে যেত। আমরা দেখেছি যতক্ষণ পর্যন্ত সেই ভার্চ্যুয়াল অ্যাক্ট না করতে পেরেছি ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু আদালত ও বিচার কাজ বন্ধ ছিল, আইনজীবীদের কাজও বন্ধ ছিল। ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালু হওয়ার পরে ৭২ হাজার লিটিগ্যান্ট পাবলিককে রিলিফ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এটা আমাদের একটা গর্বের বিষয়। ভার্চ্যুয়াল কোর্ট করার এই পদক্ষেপগুলো বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার এবং ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. গোলাম কিবরিয়া বক্তব্য রাখেন।

Pin It