সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। বাজারে খুচরা প্রতি লিটার তেলের দাম দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে।
এছাড়া দাম বেড়েছে চিনির। দাম কমেছে সবজি, নতুন আলু ও ডিমের। অন্যদিকে, অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, মুরগি, গরু ও খাসির মাংসসহ অন্যান্য পণ্যের দাম।
শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর মিরপুরের মুসলিম বাজার, মিরপুর-১ নম্বর বাজার, ২ নম্বর বাজার, ৬ নম্বর বাজার, ১১ নম্বর বাজার, মিরপুর কলোনি বাজার, কালশী বাজার ও পল্লবী এলাকা ঘুরে বাজারের এ চিত্রই দেখা গেছে।
এসব বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়, শালগম বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, গাজর ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, শিম ২০ টাকায়, বেগুন ২০ টাকায়, করলা ৩০ টাকায়, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, পাকা টমেটো ৩০ টাকায়, কেজি প্রতি কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
প্রতি পিস লাউ আকার ভেদে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকায়, ১০ টাকা কমে বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, ফুলকপি ১০ টাকার মধ্যে।
হালিতে পাঁচ টাকা কমে কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়, প্রতি কেজি জালি কুমড়া ৩০ টাকায়, ছোট মিষ্টি কুমড়া ২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেছে নতুন আলুর। কেজিতে পাঁচ টাকা কমে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও আদা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, রসুনের কেজি ১২০ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি চিনিতে পাঁচ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। প্রতি কেজি আটাশ চাল ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, পায়জাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, নাজিরশাইল ৬০ টাকায়, পোলাওয়ের চাল ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা ভোজ্যতেল লিটারে দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৭ থেকে ১৩০ টাকায়।
কালশী বাজারের খুচরা তেল বিক্রেতা পিন্টু পাটোয়ারী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের ব্যারেল প্রতি দাম বেড়েছে। এ কারণে সপ্তাহের ব্যবধানে আবার খুচরা বাজারে লিটার প্রতি দুই টাকা থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। শীতের মৌসুমে বাজারে কমেছে শ্রমিক, একই সঙ্গে তেলের উৎপাদন কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এ কারণে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। তাই ভোজ্যতেলের দাম আরও বাড়বে।
এদিকে, কমেছে ডিমের দাম। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ১৫০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৬০ টাকা, ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়।
১০ টাকা দাম কমে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি। ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি।
এসব বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংস। এছাড়া মসলাসহ অন্যান্য পণ্যের দামও স্থিতিশীল রয়েছে।
বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, বকরির মাংস ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়, মহিষের মাংস ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায়।
এসব বাজারে প্রতি কেজি শিং মাছ (আকার ভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকার ভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়, মাগুর মাছ ৬০০ টাকায়, মৃগেল ১১০ থেকে ১৫০ টাকায়, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়, ইলিশ প্রতি কেজি (আকার ভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ১০০০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকায়, ফোলি মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, পোয়া মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, পাবদা মাছ ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়, টেংরা ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, টাটকিনি মাছ ১০০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৪০ টাকায়, সিলভার কার্প ১০০ থেকে ১৪০ টাকায়, দেশি কৈ মাছ ৭০০ টাকায়, কাঁচকি ও মলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, গুড়া বেলে ১২০ টাকায়, রূপচাঁদা মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, আইর মাছ ৫০০ টাকায়, রিঠা মাছ ২২০ টাকায় ও কোরাল ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মিরপুর ১১ নম্বর বড় বাজারের মাছ বিক্রেতা টিপু সুলতান বলেন, বাজারের এখন ক্রেতার সংখ্যা অনেক কমেছে। মাছ তেমন বেচা-বিক্রি নেই। গতকাল মাছ বাজারে একজন কাস্টমারও আসেননি। করোনার কারণে মানুষজন বাজারেও তেমন আসছেন না। এলাকায় ফেরিওয়ালারা ঘুরে ঘুরে মাছ বিক্রি করেন। এ কারণে ক্রেতারা বাজারে কম আসছেন। ফেরিওয়ালারা বাজারের তুলনায় বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কম দামে মাছ বিক্রি করছেন। সব মিলিয়ে আমাদের ব্যবসা এখন খারাপ যাচ্ছে।
মিরপুর ১১ নম্বর বাজারের ক্রেতা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তা গোলাম মাহমুদ প্রিন্স বলেন, বাজারে মাছের দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখলাম সবজির দাম অনেক কমেছে। কিন্তু বেড়েছে ভোজ্যতেল আর চিনির দাম। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আমাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলে ভালো হতো।